জীবনে প্রথম শারীরিক সম্পর্কে জড়াই যখন আমার বয়স ২০।অবাক হচ্ছেন? অবাক হবার ই বিষয়। বাড়িতে সৎ ভাইয়ের অমানবিক নিযার্তনের শিকার হতাম প্রতিদিন।অনেকটা জেদের বশত বাবাকে রাজি করিয়ে ঢাকাতে ভতি' হলাম।থাকতাম ধানমন্ডির শুক্রাবাদ এলাকায়।অনেক খেত ছিলাম অইসময়।স্মার্টনেছ বুঝতাম না।মফস্বলের সাদামাটা মেয়ে ছিলাম। বান্ধবিদের সাথে ক্লাসের বিরতিতে কাছের এক শপিং মলে গেলাম।আমার বান্ধবি তানিয়াকে দেখলাম একটা ছেলের সাথে কথা বলতে।কিছুক্ষণ পর ছেলেটিকে এনে পরিচয় করিয়ে দিলো বলল ওর বন্ধু।ছেলেটি বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছিলো। আমি ইগনর করছিলাম।কয়েকদিন পরে আবিষ্কার করি ছেলেটি আমার বাসার পাশেই থাকে।শুরু হলো তার আমার পিছনে লাগা।ফেসবুকে বন্ধু হতে চাওয়া,আমার সাথে দেখা করতে চাওয়া,ভাসি'টির গেটে দাড়িয়ে থাকা। মেয়ে মানুষ না না করতে করতেই কখন যেন প্রেমে পড়ে গেলাম।তার অবশ্য আগে একজন প্রেমিকা ছিল।
সেই মেয়ে নাকি তার সাথে অনেক বড় প্রতারণা করেছে।দিনের পর দিন ভালোবাসার মিথ্যে অভিনয় করেছে।বলতে যেয়ে ছেলেটা কাদো কাদো হয়ে গেলো। ছেলেটি আমায় অনেক অনুরোধ করলো আমি যেন তার সাথে এরকম কখনো না করি।ছেলেটির নামটাই এখনও বলা হয়নি।ওর নাম ছিল সরন।আর আমি মোনা।এভাবেই চলছিল আমাদের প্রেম।কিছুদিন পর লক্ষ্য করলাম ও আমার একটু বেশিই কাছে আসতে চায়।আমি মফস্বলের মেয়ে এত কিছু তখনও বুঝতাম না।ওর বাবার বাসা ছিল কুমিল্লা কিন্ত পড়াশোনা ছিল ঢাকাতেই। সরন আমার থেকে অনেক স্মার্ট ছিল।একদিন আমায় বলল ওর বন্ধুর জন্মদিন।বাসায় দাওয়াত করেছে সব বন্ধুদের। বলল আমাকেও নিয়ে যাবে।আমি সাজুগুজু করে সরনের সাথে বের হলাম।বন্ধুর বাসা মিরপুরে।
বাসায় যেয়ে দেখি তার বন্ধু ছাড়া আর কেউ নেই। আমার একটু ভয় করলো।খানিকক্ষণ পর বন্ধুটি চলে গেলো আমি আরো ভয় পেলাম।আমি বললাম কই তোমার বন্ধুর জন্মদি। অন্য বন্ধুরা কোথায়।সরন বলল একটা প্রব্লেম এর জন্য প্রোগ্রাম বাদ দেয়া হয়েছে।আমি শুনে সাথে সাথে বললাম আমি এখানে থাকবোনা আমাকে নিয়ে চলো।সরন শুনলে আমাকে এক হেচকা টান দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলো।অনেক্ষণ ধস্তাধস্তি হলো।আমি চিৎকারে করছিলাম।একসময় সরন আমাকে ছেড়ে দিলো।বলল তুমি এত খেত কেন? ঢাকাতে কমবেশি সব বফ গফ রাই ফিজিক্যাল করে।আমার সব বন্ধুরাও তার গফ দের সাথে করে আর তুমি সত্যি একটা খেত।আমি খুব কান্না করছিলাম।সেই যাত্রায় বেচে যাই।এরপর থেকে সরন আমাকে ইগ্নর করে।কথা বলে না।আমিও একটু এড়িয়ে চলি।একদিন ওর এক বন্ধু মারফত জানতে পারি সরন ঠিকমত ক্লাসে যাচ্ছে না,খাওয়া দাওয়া করছে না,সবসময় মনমরা হয়ে থাকে।শুনে কেমন যেন মায়া হলো।সরনকে ফোন দিয়ে দেখা করতে বললাম।আমি ওকে দেখে চমকে উঠলাম।কেমন উশকোখুষকো চেহারা হয়েছে।সরন আমার কাছে অইদিনের জন্য মাফ চাইল এটাও বলল তার আগের গফ এর সাথে তার ফিজিক্যাল রিলেশন ছিলো তাই তার চাহিদাটা এখনও রয়ে গিয়েছে। আমি সরনকে বললাম তুমি আমার সবকিছু পাবে কিন্ত তার আগে আমাকে বিয়ে করতে হবে।সরন কিছুটা চুপ হয়ে গেলো বলল ভেবে দেখি একটু।কয়েকদিন পর আমার ফাইনাল পরীক্ষার ছুটিতে গ্রামে গেলাম।সপ্তাহের মত কাটিয়ে আবার ঢাকায় ফিরছি। সরন ফোন দিয়ে বলল আমাকে বাসস্ট্যান্ডেে নিতে আসবে।বাসস্ট্যান্ড নামার পর সরন আমায় বলল হোসটেলে পরে যেও আজ আমরা বিয়ে করব।আমি কি বলব বুঝতে পারছিলাম না।সরন বলল প্লিজ না করোনা।আমি সব ব্যবস্থা করে রেখেছি।যাই হোক এক কাজি এসে বিয়ে পড়ালো ওর এক বন্ধুর বাসায়।আমরা বিয়ের পর কক্সবাজার গেলাম।সবকিছু যেন সপ্ন মনে হচ্ছি। এভাবেই চলছিল দিন।এরপর লক্ষ্য করলাম সরনের ফোন প্রায়ই বিজি থাকে সারারাত বিজি।আমাকে বলে তার বাবা,তার বন্ধু বিদেশ থেকে ফোন দেয়।দিনের পর দিন চলছে এরকম।আমি ওর ফোন দেখতে চাইলে বলে মোবাইল পাসো'নাল জিনিস।এসব দেখা যাবেনা আমি কি কখনো তোমার ফোন দেখতে চাইছি? আসলে তুমি খেত ই থেকে গেলে।খুব কান্না করেছিলাম অইদিন।এরপর অনেকের মুখে শুনতাম সরন অন্য মেয়ে নিয়ে ঘুরে। একদিন হাতেনাতে ধরাও পেলাম।সেদিন ও আমাকে রাস্তায় সবার সামনে থাপ্পড় মেরে অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছিলো।
আমি তখন পাগলের মতো অবস্থা।আমি সরনকে বললাম আমাকে ডিভোস'দাও।সে এটা শুনে আমাকে এড়িয়ে চলে ফোনধরে না, মেসেজ এর উত্তর করে না।এর মাঝে প্রায় শুনি সরন মেয়ে নিয়ে এখানে গেছে সেখানে গেছে।সরন নিজেই একদিন আমাকে ফোন দিয়ে দেখা করতে চাইলো।আমিও গেলাম।কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল জানি আমার কিছু খারাপ অভ্যাস আছে।আমি চাই সেগুলি থেকে বের হতে। আর এর জন্যই আমার তোমাকে দরকার অনেক তুমিই পারবে আমাকে ফেরাতে।আমি কতক্ষণ মুতি'র মত চুপ করে থাকলাম।এরপর বললাম ওকে আমি তোমার পাশে থাক। এরপর ভালোই চলছিলো।ওকে নামাজ পড়তে বলতাম।ও অনেকটাই বাধ্য হতে লাগল,আমিও সস্তি পেলাম।একদিন বলল চলো কক্সবাজার ঘুরে আসি।রাজি হলাম।ওখানে যেতে যেতে রাত হলো সরন ক্লান্ত ছিলো ঘুমিয়ে পড়লো হোটেলে যেয়ে।মাঝরাতে ওর ফোনে মেসেজ আসতে লাগলো বারবার।আমি সরনের মোবাইল লক কোড জানি অনেকবার খুলতে দেখেছি, কিন্ত আমি কখনও খুলি নি।সাহস করে খুললাম একটা মেয়ে লিখেছে জান গত পরশু রাতে তোমার সাথে যা হয়েছে আমি ভুলতে পারছিনা,তোমার শরীরের গন্ধ আমার নাকে লেগে আছে।আমার ত মাথা পাগল অবস্থা।আমি ওর সব মেসেজ, পিকচার ঘাটতে লাগ্লাম।আমি যা দেখলাম ভাষায় প্রকাশ করার মত না।অগনিত মেয়ের সাথে তার ফিজিকাল রিলেশন, সেক্স ভিডিও।আমি ভয়ে কাপতে লাগলাম এ কার সাথে শুয়ে আছি আমি।গত ১ সপ্তাহে ৩/৪ টা মেয়ের সাথে ওর ফিজিক্যাল হয়েছে।আমি হাউমাউ করে কাদতে শুরু করলাম।আমার কান্নাকাটির শব্দে সরন ঘুম থেকে জেগে৷ গেল।উঠেই দেখল ওর ফোন আমার হাতে।ওর আর বুঝতে বাকি রইলোনা।অনেক চড় থাপ্পড় লাথি পড়লো আমার শরীরে।অকথ্য ভাষায় গালাগালি।পরদিন আমি অনেক জর,গায়ে ব্যথা নিয়ে একাই ঢাকায় চলে আসি।সরনের সাথে আর যোগাযোগ করিনা।কয়দিন পর আমি বুঝতে পারলাম আমি প্রেগন্যান্ট। মাথা চক্কর দিতে লাগলো হায় আল্লাহ এখন কি হবে।কিছুদিন আগে বাবা মারা গেছে আমার।তারপর সরনের সাথে যা ঘটলো,আবার পেটে বাচ্চা আমি কোথায় গিয়ে দাড়াবো? কে আমায় সাহায্য করবে? অবশেষে সরনকে আবার ফোন দিলাম।
সব খুলে বললাম।সরন আমাকে একজন ডক্টর এর কাছে নিয়ে গেল।উনি পরিক্ষা নিরিক্ষা করে বললেন আমি সত্যি প্রেগন্যান্ট। সরনকে বললাম আমাদের বিয়ের কথা তার বাসায় জানাতে।সরন বলল কিসের বিয়ে তোমার সাথে আমার কোন বিয়ে হয়নি সব কিছু ছিলো সাজানো।আমার মাথায় আকাশ ভেংগে পরলো।তাহলে এতদিন যা ছিল সব মিথ্যে? আমার পেটের সন্তান তার কি হবে? আমি কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না। অনেক চিন্তা করে সরনের মায়ের নাম্বার জোগাড় করে ফোন দিলাম।সেখানে ফোন দিয়ে যা শুনলাম তা শুনে আমি আর আমার অস্তিত্ব খুজে পাচ্ছিলাম না।সরনের অনেকদিন আগেই তার মামাতো বোনের সাথে বিয়ে হয়েছে,তাদের সন্তান ও আছে। আমি যেন পুরো পাগল হয়ে গেলাম। মাকে অনেকদিন পর ফোন দিলাম আমার মা খুব সহজ সরল মানুস। মা আমাকে বলল সৎ ভাই মাকে খুব জালায়, মারধর করে বাবা মারা যাওয়ার পর অত্যাচার আরও বেড়ে গেছে।মা অনেক কাদলো।বলল তোর ত কয়দিন পর ফাইনাল পরিক্ষা।তুই জলদি পাশ দিয়া একটা চাকরি নে।নিয়ে আমারে এখান থেকে নিয়ে যা নইলে দেখবি তর মা মইরা গেছে।ফোন টা রাখলাম।কত টা কান্না করেছি আর পেটের বাচ্চাটাকে হাত বুলিয়ে আদর করেছি হিসাব নেই।এরপর এ্যবরশন করলাম।থানা পুলিশ করে কাজ হলোনা কিছুই। পুলিশ শুধু টাকা বুঝে।আমাকে কে দেবে এত টাকা।কোনমত পরিক্ষা দিলাম।এরপর মানষিক সমস্যা দেখা দিল।বাচ্চাটার জন্য হাউমাউ করে কাদতাম।এভাবে ৬ মাস কেটে গেলো।সরন এখন অনেক বড় ব্যবসায়ী তার শশুড় এর টাকায়।ফ্লাট,গাড়ি সব আছে তার।আমি শুধু জ্যন্ত লাশের মত জীবন কাটাতে থাকি।এইসময় অনেক পুরনো এক বন্ধুর সাথে রাস্তায় দেখা।আমাকে দেখে বেশ বুঝতে পারছিলো আমি ভালো নেই। স্কুল জিবনে এই ছেলেটি আমাকে অনেক পছন্দ করতো কিন্ত কখনও মুখে বলেনি।আমি বুঝতাম।আমি ওকে আমার জিবনে ঘটে যাওয়া সবকিছু জানালাম। সেদিন ওর চোখে আমার জন্য মায়া ছিলো নাকি করুনা নাকি ঘৃনা আমি বুঝিনি।কিন্ত ও আমাকে সবসময় যতটা পারত সময় দিত।আমাকে বুঝাতো।
আমি আস্তে আস্তে কিছুটা সাভাবিক হতে শুরু করি।অনুভব করলাম ও আমাকে ভালোবাসে কিন্ত বুঝেও কিছু বলতাম না।কিছুদিন পর আমার জব হলো।মাকে আমার কাছে নিয়ে আসলাম।সবকিছু ভালোই চলছিল এর মাঝে আমার বন্ধুটি আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়।আমি না করি।যাই হোক ১ বছর পর আমাদের বিয়ে হয়।ও আমাকে সুখেই রেখেছে।বিয়ের প্রায় ২ বছর হতে চলেছে ও কখনো ১ দিনের জন্য আমাকে আমার অতীত মনে করাইনি।আমি এখন ৭ মাসের প্রেগন্যান্ট। খুব যত্ন করে ও আমার।সরন এখন অনেক খোজে আমায়।ওর ব্যবসায় লস খেতে খেতে পথের ফকির হয়ে গেছে।ওর বউ আর ওর সাথে থাকেনা।আমাকে ফেসবুকে অনেক মেসেজ করে, মাফ চায় আমি কোন উত্তর করিনা। আল্লাহ বিচার করেছেন। মেয়েদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ ভালোবাসা দোষের না তবে বুঝে শুনে ভালোবাসুন যাতে কাউকে আমার মত যন্ত্রনা, দুঃখ পেতে না হয়,একটা জীবন বলি দিতে না হয়।
(বিঃদ- গল্পটি কাল্পনিক নয়। সত্যি। আমার খুব কাছের বোন হুমায়রা আহমেদ মোনা তার জীবনের ঘটে যাওয়া।গল্পটা শোনার পর তার অনুমতি নিয়েই post করলাম।
#Real_Story
লিখাঃ সুষমা দাস
২.
আমার
মতো এত কিউট গুলুমূলু
একটি মেয়েকে তুমি ওই সুগার ড্যাডির
সাথে বিয়ে দিতে পারো না আম্মু।"
মেয়ের
কথা শুনে আড় চোখে তাকালেন মিসেস নাজনীন।মেয়ে তার বয়সের তুলনায় একটু বেশি পাকা।একজন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারারকে সে সুগার ড্যাডি
বলছে।প্রতিবাদ করে মিসেস নাজনীন বলে,"দ্বীপকে তোমার কোন দিক থেকে সুগার ড্যাডি মনে হয় বলবে নীরা?ওর বয়স মাত্র
বত্রিশ।"
নীরা
অবাক হয়ে বলে,"বত্রিশ এটা তোমার কাছে মাত্র মনে হলো আম্মু!আমার বয়স আর তার বয়স
দেখো।"
"এই
বয়স কোনো ফ্যাক্ট না।তোমার বাবার সাথে আমার বয়সের অনেক ফারাক।তাই না বলুন?"নীরার
বাবাকে উদ্দেশ্য করে।
নীরার
বাবা মিস্টার রবিন স্ত্রীকে কিছুটা ভয় পান।তাই তিনি বলে,"হ্যা হ্যা ঠিকই তো।বিয়েতে বয়স কোনো ফ্যাক্ট না।এজন্যই তো তোমার আম্মু
আর আমি হলাম লাভ বার্ডস।"মেয়েকে চোখ টিপুনি দিয়ে।
নীরা
জানে তার আব্বু তার আম্মুর কথার নড়চড় করবে না।যমের মতো ভয় পায় তিনি।নীরা মন খারাপ করে
চলে গেলো ঘরে।
(নীরার
পুরো নাম মুনজেরিন নীরা।এবার ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষে উঠেছে,বয়স আঠারো।ক্লাস টেনে একবার ফেইল করেছে তাই তার এই অবস্থা।বাবা স্বর্ণের
ব্যাবসা করেন,মা গৃহিণী।নীরার বড়
ভাই আছে।নাম নির্বাণ আহমেদ নীরব।এখন জার্মানিতে পড়াশোনা করছে ফুড নিউট্রিশন নিয়ে। আর মাত্র কয়েকমাস
সময় আছে।তারপর দেশে চলে আসবে।)
ঘরে
এসে নীরা তার মিনিকে(বিড়াল) কোলে নেয়।মিনিকে আদর করতে করতে কল দেয় তার
প্রাণপ্রিয় বান্ধবী কেয়াকে।
(কেয়াও
নীরার সাথে পড়াশোনা করে।সেও নীরার মত ক্লাস টেনে
ডাব্বা প্রাপ্ত।পড়াশোনায় কেউই ভালো না। নীরাদের এলাকায় কয়েক বাসা পড়েই কেয়াদের বাসা।কেয়ার পুরো নাম কুহেলিকা কেয়া।কেয়ার বাবা একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন,মা গৃহিণী।কেয়ার কোনো
ভাই বোন নেই।)
নীরার
কল দেখে সাথে সাথে রিসিভ করে কেয়া।বলে,"হ্যা দোস্ত বল।"
কান্না
কান্না ভাব করে নীরা বলে,"আর তোর দোস্ত।জানিস
আব্বু আম্মু মিলে কি করেছে?"
"তুই
না বললে জানবো কিভাবে?"
"আব্বু
আম্মু আমার বিয়ে ঠিক করেছে।তাও কি না ওই
সুগার ড্যাডির
সাথে।"
বুঝে
উঠলো না কেয়া।সুগার ড্যাডি
আবার কে?সাথে সাথে
বলে ওঠে,"এই সুগার ড্যাডি
আবার কে দোস্ত?আংকেল
আন্টি কি না শেষ
পর্যন্ত তোকে ফিফটি প্লাস কারোর সাথে বিয়ে দিবে!এটা আশা করা যায় না।"
তেতে
ওঠে নীরা।সে কোথায় বত্রিশ বছরের লোককে সুগার ড্যাডি বলছে আর তার বান্ধবী
ভাবছে ফিফটি প্লাস কাউকে।নীরা নিচের ঠোঁট উচু করে বলে,"আমি ওই প্রতিবেশী খারুচ
স্যারের কথা বলছি।যে কি না আমাকে
ক্লাসে কান ধরে দাড় করিয়ে রেখেছিলো।"
কিছুক্ষণ
নিরবতা পালন করে কেয়া বলে,"দোস্ত আমাদের ইকোনমিকস ডিপার্টমেন্টের আদনান কবির দ্বীপ স্যারের কথা বলছিস?"
"হ্যা"
"তুই
না ওনাকে ক্যাডার সাহেব বলতিস! হঠাৎ সুগার ড্যাডি উপাধি দিলি কেনো?"
"ওই
ছেরি বুঝোস না কেন বলি?আমার বয়স সবে আঠারো। আর উনি কি
না বত্রিশ।হিসাব করে দেখ চৌদ্দ বছরের ডিফারেন্ট।ওনাকে আমি বিয়ে করবো না।"
নীরার
নেকী কান্না বুঝতে পারে কেয়া।তারপরও শান্তনা দিতে বলে,"আচ্ছা দোস্ত শান্ত হ।তুই কিভাবে জানলি যে ওনার সাথে
তোর বিয়ে ঠিক হয়েছে?"
নীরা
একটু আগের ঘটনা কেয়াকে বলে,"আমি ছাদে গিয়েছিলাম।ওই পুচকু অভ্র ছিলো সেখানে।বয়স মাত্র চার কিন্তু মুখে পাকা পাকা কথা।আমাকে ওদের ছাদ থেকে দেখে বলে,' মামী।'
আমিতো
অবাক কাকে ডাকছে না ডাকছে। পরে
দেখি আমাকে ডাকছে।আমিও জিজ্ঞাসা করেছি,' আমাকে কেনো মামী বলছো?'
অভ্র
বলে,' নানু বলেছে তুমি আমার মামী হবে।মামার সাথে তোমার বিয়ে দিবে।তোমার মা বাবাও এসেছিলো
আমাদের বাসায়।'
অভ্রর
কথা শুনে আমার মাথায় বাজ পড়ে।সাথে সাথে আম্মুকে জিজ্ঞাসা করি।আম্মু স্বীকার করেছে সবকিছু।"
নীরার
কথা শুনে কেয়া মিটিমিটি হাসে। জোরে হাসলে নীরা রাগ করবে। নীরাকে সান্তনা দিতে বলে,"আরে দোস্ত চিল কর।দ্বীপ স্যার যে রাগী আর
বদমেজাজি উনি তোকে বিয়ে করবে না।"
সাথে
সাথে খুশি হয় নীরা।বলে,"হ্যা রে,তুইতো ঠিক
কথাই বলেছিস।উনি তো মেধাবী ছাত্র
ছাত্রী বেশি ভালোবাসে।আমার মত ফেলটুশ উনি
বিয়ে করতে চাইবে না।"
"বাহ,নিজের সুনাম নিজে কি সুন্দর ঝরঝর
করে বলছে।"
"আচ্ছা
ঠিক আছে ঠিক আছে।জানি এটা গর্বের বিষয় না।তাও আমার কাছে পড়াশোনা ভালো লাগে না।রাখছি এখন বাই।"বলেই কল কেটে দিলো।
এখন
শান্তি পাচ্ছে নীরা।ওই ক্যাডার সাহেব তাকে নিজে থেকেই রিজেক্ট করবে।তাকে আর কষ্ট করা
লাগবে না।ভেবেই লুঙ্গি ড্যান্স দিতে থাকে।
(আদনান
কবির দ্বীপ পড়াশোনা শেষ করে বিসিএস ক্যাডার দিয়ে সফল হয়েছে।তাই তার বয়স একটু বেশি।ঢাকা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোনমিকস এর লেকচারার।নীরার ডিপার্টমেন্টের
স্যার অবসর প্রাপ্ত হওয়ায় দ্বীপ এই ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব
নিয়েছে।এছাড়া দ্বীপ ও নীরা দুজন
প্রতিবেশী।পাশাপাশি বাসা দ্বীপ ও নীরার।শুধু তাই
না নীরার প্রাইভেট টিচার এই দ্বীপ।দ্বীপের বাবা
মিস্টার সমুদ্র একজন ব্যাবসায়ী সাথে একটি রেস্টুরেন্টের মালিক।মা মিসেস সাবিনা একজন গৃহিণী।দ্বীপের বোনের নাম দীপান্বিতা দীপা।ঘরে বসে অনলাইনে জামা কাপড়ের ব্যাবসা করে।দ্বীপের একমাত্র আদরের ভাগ্নে অভ্র বয়স চার।)
নীরা
ড্যান্স করছে আর নীরার মিনি
এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি করতে থাকে।ড্যান্সের তালে তালে নীরা গাইতে থাকে,"ক্যাডার আমায় করবে রিজেক্ট,শান্তি আমার তাতে।কে কি বলল ভাবিনা
আমি, ঠেকা পড়েনি আমার শুনতে।ক্যাডার তুমি সুগার ড্যাডি।তোমায় ভালো বাসিনা আমি।"
গান
গাইতে গাইতে আর নাচতে নাচতে
পিছনে ফিরে দেখে মিসেস নাজনীন অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।
মাকে
দেখে নীরা নাচ বন্ধ করে দেয়।শুকনো ঢোক গিলে বলে,"কি হয়েছে আম্মু?"
বাম
ভ্রু উচু করে মিসেস নাজনীন বলে,"খুব মজা না দ্বীপ তোমাকে
রিজেক্ট করবে বলে?"
মুখের
বত্রিশ পাটি বের করে নীরা বলে,"না মানে ওই
আরকি।"
মেয়েকে
ওয়ার্নিং দিতে মিসেস নাজনীন বলে,"শুনো নীরা দ্বীপ কি করবে না
করবে তা দেখার জন্য
আমি আর তার বাবা
মা আছি।তোমাকে যেনো আমি নাকোচ হতে না দেখি।পড়াশোনার অবস্থা
তো খুবই খারাপ।কে বিয়ে করবে তোমাকে?মিসেস সাবিনা ভদ্রতার সাথে ভালোবেসে তোমাকে আপন করে নিচ্ছে।চুপচাপ বিয়ে করবে।তানাহলে রিক্সা চালক দেখে বিয়ে দিবো।"বলেই চলে গেলেন মিসেস নাজনীন।
মায়ের
কথায় মুখ চুপসে এলো নীরার।তার মা কি ভালো
পাত্র দেখে না? বেছে বেছে এই ক্যাডার সাহেব
আবার এখন রিক্সা চালক।আচ্ছা রিক্সা চালক হ্যান্ডসাম দেখে কেউ কি আছে?থাকলে
সে প্রেম করে বিয়ে করে নিবে।তার মা যে লেভেলের
পিছে লেগেছে তাতে বোঝা যায় স্যার আর ছাত্রীর বিয়ে
দিয়েই ছাড়বে। ভাবা যায় বিষয়টি!স্যার বিয়ে করেছে তার ছাত্রীকে।তাও কি না সেই
ছাত্রী যাকে কান ধরে দাড় করিয়ে রাখে।মাঝে মাঝে তো ঠাস করে
গালেও কয়েকবার থাপ্পড় বসিয়ে দিয়েছে।তবে ওটা প্রাইভেট পড়ানোর সময়। কারো সামনে না।
আজকে
শুক্রবার নীরার ছুটি।দ্বীপ পড়াতে আসবে না।বিকাল বেলা নীরা ছাদে যায় তার প্রিয় হলুদ গোলাপ ফুলগাছ গুলোর যত্ন করতে।নীরার গোলাপ গাছে কয়েকটি ফুল ফুটেছে।যেগুলো নীরার খুব ভালো লাগে।নীরা ফুল গাছে পানি দিতে থাকে।তখন তার পাশে আসে রিক।
(রিক
নীরাদের বাসায় ভাড়া থাকে।রিকের বাবা লন্ডন থাকেন।রিকের বাবা ও মা বিয়ের
পর লন্ডনে সেটেল হয়।ওখানেই রিকের জন্ম হয়।রিক ওখানেই বড় হয় কিন্তু রিকের নানু অসুস্থ হওয়ায় বাংলাদেশ আসতে হয়।তখন থেকেই রিক ও তার মা
এই ঢাকা শহরে ভাড়া থাকে।রিকের বাবা যখন পার্মানেন্ট আসবে তখন ঢাকায় বাড়ি করবে তারা।রিক এবার মাস্টার্স ভর্তি হয়েছে।)
এই
গল্পটা পড়তে চাইলে মোঃ আল আমিন এই
আইডিতে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট বা ফলো দিয়া রাখুন।
গল্পের নিচে দিয়া রাখছি
সবাই ওখানে টিপ দিয়া ফলো করুন
রিক
নীরাকে উদ্দেশ্য করে বলে,"হাই কিউটি।"
"হাই"(ইশ এই রিককে
কি আমার মায়ের চোখে পড়ে না?)মনে মনে বলে নীরা।
রিক
মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে,"আমি তোমাকে সাহায্য করি?"
নীরা
ঘাড় কাত করে হ্যা বোঝায়।মনে মনে বলে,"মেরে দিলমে লাড্ডু ফুটা দিয়া।"
রিক
কাজ করে দেয়।টবের মাতিগুলো ঝুরঝুরে করে তাতে প্যাকেট থেকে জৈব সার মিশিয়ে বলে ওঠে,"কিউটি,একটি কথা বলবো তোমাকে?"
নীরা
এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে হ্যা বোধক মাথা নাড়ালো।
রিক
দেখলো নীরার সম্মতি।তাই বলে,"তোমার বান্ধবী কেয়া আছে না?ওকে আমার
খুব ভালো লাগে।কয়েকমাস ধরে ওকে আমি ফলো করি।যদি কিছু মনে না করো ওর
নাম্বার দিতে পারবে?"
নীরার
মনের মধ্যে এবার বিরহের গান বাজতে লাগলো,"লাড্ডু ফাট গায়া। খাতাম বাই বাই টাটা।"
রিক
নীরার কোনো উত্তর না পেয়ে ভেবে
নেয় নীরা কেয়ার নাম্বার দিবে না।অবশ্য বান্ধবীর অনুমতি ছাড়া কিভাবে দিবে?তাই রিক নিজে বলে ওঠে,"ওকে ফাইন, দেওয়া লাগবে না নাম্বার।শুধু এবার
কেয়া তোমাদের বাসায় আসলে আমার সাথে একটু কথা বলিয়ে দিও প্লিজ।আমার জীবনে ফার্স্ট লাভ এটা।যদি ওর আলাদা কোনো
ভালোবাসার মানুষ না থাকে আমি
ওকে পেতে চাই।"
নীরা
আহত দৃষ্টিতে হ্যা সূচক মাথা নাড়ায়।রিক নীরার মুখের দুই পাশের গাল টেনে বলে,"থ্যাঙ্ক ইউ কিউটি। সো
সুইট ইউ আর।"
হালকা
ব্যাথা পায় নীরা।বাচ্চা নাকি যে এভাবে গাল
টানবে।পেয়েছে কি এরা।এই গালে
একজন থাপ্পড় দেয় তো আরেকজন গাল
টেনে দেয়।সরকারি পেয়েছে তাকে?
চলবে...?
লুকোচুরি_গল্প
সূচনা_পর্ব
ইশরাত_জাহান