মশা ও টিকটিকির বন্ধুত্ব।বন্ধুত্বের গল্প। গোলাপ মাহমুদ সৌরভ

মশা ও টিকটিকির বন্ধুত্ব
 গোলাপ মাহমুদ সৌরভ


মশা মানুষের রক্ত পিপাসু প্রাণী আর টিকটিকি মশা শিকারী প্রাণী। দুইটি প্রাণীই মানুষের বসত ঘরে বেশি পাওয়া যায়,তারা একজন আরেকজনের শত্রু। মশা যদিও ময়লা আবর্জনায় সৃষ্টি হয় কিন্তু মানুষের রক্ত পান করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছুটে বেড়ায়, কখনো রাস্তায়, দোকানে, রেস্টুরেন্টে, রুমে, রান্না ঘরে কিংবা টয়লেটে সব জায়গাই তাদের আনাগোনা দেখা যায়।

মশা এমন একটি ছোট প্রাণী কিন্তু খুবই ভয়ানক। ছোট্ট এই প্রাণীটির ভয়ে মানুষ মশারীর ভিতরে নিজেকে বন্দী করে ঘুমানোর চেষ্টা করে কারণ মশা যখন কামড় দেয় তখন শরীরে ব্যথা অনুভব হয় আরামদায়ক ঘুমটা ভেঙে যায় তারা শুধু রক্তই খায় না কানের কাছে এসে বনবন করে গুনগুনিয়ে গান গায় তখন অসহ্য যন্ত্রণা মানুষ বিরক্ত বোধ করে।

মশা কোন মানুষের উপকারীতা বয়ে আনে না বরং অপকারীতা বয়ে আনে, কখনো কখনো মশার কমড়ে মানুষের শরীরে রোগব্যাধি হয়। সাধারণ মশা আর এডিস মশা দুটোই ক্ষতিকারক। এডিস মশার কামড়ে শুধু মানুষ জ্বরেই ভোগে না বরং মৃত্যু পর্যন্ত হয়। তাই দিনের বেলা ঘরে টিকটিকি মানুষের একটা উপকার করে মশা যখন ঘরের দেয়ালে বসে একটু স্বস্তি খুঁজে তখনই টিকটিকি চুপিসারে মশা গুলো ধরে নিজেদের ক্ষুধা মিঠায়। টিকটিকি তার জীবিকানির্বাহ করার জন্য দেয়াল, ঘরের মাচায় ঘুরে বেড়ায় কিন্তু রক্ত পিপাসু মশা গুলো খেয়ে যখন ঘরের বিভিন্ন জায়গায় মলত্যাগ করে তখন ওই জায়গায় দূর গন্ধ ছড়ায় এবং বিছানা কিংবা খাবারের উপর পড়লে তা নিমিষেই নষ্ট হয়ে যায় কারণ টিকটিকির মলমূত্রে বিষাক্ত এসিড রয়েছে কাপড়ের যে জায়গায় পরবে সেখানে পুড়ে যায়। 

তাছাড়া টিকটিকি মারা নাকি সুন্নত বিশেষ করে সৌদি আরবে সৌদিয়ানরা যেখানেই টিকটিকি দেখবে মেরে ফলবে। একদিন লক্ষ্য করে দেখা গেলো একটা টিকটিকি আর একটা মশা দেয়ালে বসে যুক্তি করছে কারণ কেউ কাউকে আক্রমণ করছে না তারা বলছে চলো আমরা বন্ধু হয়ে যাই কারণ তুমিও মানুষের শত্রু আমিও শত্রু চলো আমরা বন্ধু হয়ে মানুষের জীবনটা বিষিয়ে তুলি তা শুনে মশা বললো ঠিক বলেছ বন্ধু আজ থেকে আমরা দুজন বন্ধু। একদিন টিকটিকি লক্ষ্য করলো মশা প্রতিদিনই রক্ত খেয়ে লাল পুষ্ট হয়ে থাকে আর টিকটিকি না খেয়ে দিনের দিন দূর্বল হয়ে যাচ্ছে কারণ মশার খাবার মানুষের রক্ত কিন্তু টিকটিকির খাবার মশা  এখনতো টিকটিকি বেকায়দা পরে গেছে কয়দিন যাবত খাবার পাওয়া যাচ্ছে না এখন কী করা যায়। মশা বললো কী খবর বন্ধু?  টিকটিকি বললো খবর আর কী বন্ধু কদিন ধরে খাবার খেতে পারছি না শরীরটা দূর্বল লাগে কী করবো ভেবে পাচ্ছি না, কী খাওয়া যায় বলতো? দাঁড়াও বন্ধু আমি একটু ভেবে দেখি কী করা যায় মশা বললো। বন্ধু আমার খুব ক্ষিদে পেয়েছে একটা ব্যবস্থা করো। পরের দিন এসে মশা বললো বন্ধু তুমি এক কাজ করো তুমি মাছি তেলাপোকা খেতে পারো। ঠিক বলেছ বন্ধু তাই করতে হবে। মশার বুদ্ধি শুনে সারাদিন টিকটিকি  মাছি তেলাপোকার সন্ধানে ঘুরে বেড়ায় কিন্তু সফল হলো না অবশেষে ক্লান্ত হয়ে শুইয়ে রইল মশা এসে বললো কী বন্ধু খাওয়া দাওয়া করেছ কী? টিকটিকি রাগ করে কথা বলে না। মশার বুঝতে অসুবিধা হয়নি বন্ধু খেতে না পেরে রেগেমেগে ফায়ার হয়ে আছে। মশা কে দেখে টিকটিকির গায়ে যেন আগুন ধরলো আমি না খেয়ে আছি আর ও খেয়ে আরামে ঘুমায় তা হবে না। টিকটিকি শুইয়ে চিন্তা করে দেখলো খাবারের সাথে রাগ করে কিংবা মায়া করে না খেলে আমি বাঁচতে পারবোনা বরং নিজের খাবার নিজেরই জোগাড় করতে হবে, আজ থেকে মশার সাথে কোন বন্ধত্ব নয় শিকার করতে হবে। পরের দিন মশা বললো কী বন্ধু খাওয়া দাওয়া হয়েছে? টিকটিকি বললো এখন হবে! কী ব্যবস্থা হলো তাহলে। ব্যবস্থা করছি বলে মশার দিকে টিকটিকি এগিয়ে গেলো কিন্তু মশা অনেক চালাক কী বন্ধু তোমার গতিমতি ভালো দেখছি না। টিকটিকি মশা কে ধরার জন্য ঝাপ দিলো কিন্তু মশা দ্রুত উড়ে গেলো কিন্তু দূর্বল টিকটিকি সফল হলো না অবশেষে উপর থেকে পরে গিয়ে নিজেই মরে গেলো আর এদিকে মশার শত্রু শেষ হয়ে গেলো। চালাক মশার বুদ্ধি কাজে লাগলো এখন মশা গুলোর আর শত্রু রইলো না এমনটাই বাস্তবে কিছু ঘটনা ঘটে যা উদাহরণ স্বরূপ রয়ে যায়।

Post a Comment