মিন্টুসারেং এর কবিতা।একাত্তরকে চিনে নাও যুবক।শোকের কবিতা

একাত্তরকে চিনে নাও যুবক
মিন্টুসারেং

কথাপ্রসঙ্গে সেদিন তোমাকে কি কথায়

ভুলালো আমাদের বংশীবাদক,

তাকে জিজ্ঞেস করে দেখো,

কেনো সেদিন,

হাল ছেড়ে লাঠিহাতে রাজপথে নেমেছে কৃষক।

 

মাথায় মানচিত্র খচিত সবুজের মাঝে লাল শ্রমিক।

বজ্রকন্ঠে জয়বাংলা বলে কারফিউ ভেংগেছে বালক।

 

পথে পথে বেরিকেড দেয়া ছাত্র যুবক।

 

নাগরিক মিছিলে আবাল-বৃদ্ধ- বনিতা,

তর্জনি তুলে কি নির্দেশ দিলেন আমাদের জনক ।

 

সেদিন ছিল সাতই মার্চ,রেসকোর্স ময়দান

লক্ষ বাংঙালীর মহামিলন,

উত্তাল জনসমুদ্র মানুষে লীন।

 

জয়বাংলা,

মানুষের মানচিত্রে জেগে উঠা

ম্বাধীনত-মুক্তি,পদ্মা-মেঘনা-যমুনা।

 

তোমার আমার ঠিকানা, পিন্ডি না ঢাকা

সাত কোটি মানুষের একটাই জবাব,' ঢাকা -ঢাকা।

 

গোলামির জিঞ্জির,

নাকি স্বাধীনতা

কোটি কন্ঠে জনসমুদ্রের মহাগর্জন

চাই স্বাধিকার,একটাই কথা, আমাদের স্বাধীনতা।

 

এলো শ্লোগান,' বীর বাঙালী অস্র ধরো,

বাংলাদেশ স্বাধীন করো'।

 

বজ্রকন্ঠে ভেসে এলো সাত কোটি মানুষের ধ্বনি

'এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,

এবারের সংগ্রাম, আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম'

সময়ের অমোঘ বানী।

 

পড়ে গেল সাড়া, কে দিল ডাক, স্বাধীনতা -মুক্তির

তিনি হলেন, জাতির জনক আমাদের মুজিবর

আমাদের মুজিবর,আমাদের মুজিবর.........

 

হাজার বছরে একজনই আসে,                      

আসে শেখ মুজিবর, দিয়েছে মুক্তি, স্বাধীনতার

দুঃখীনি মা- মাটি- মাতৃভূমির কেটেছে অন্ধকার।

 

আজ আর তোমার সংগে কথা প্রসংগে কথা নয়

একাত্ত্বরকে চিনে নাও বালক

বুক প্রশস্থ করে দাঁড়াও যুবক।

 

লাল সবুজের পতাকা হাতে ছুটে যাও কিশোরী

তোমাদের সাহসী হাতে তুলে নাও স্বদেশ

আছে সতের কোটি মানুষ তোমার-আমার সহ-যাত্রী।

 

ছায়াকুঞ্জ, লক্ষীনারায়নপুর, নোয়াখালি।

 

শোকের এ কালো রাত

(২৫'মার্চ স্মরণে)

মিন্টুসারেং।

 

আজ কি থমকে দাঁড়ালো

মানব সভ্যতা,

আজ কি রাজপথে হত্যার শবমিছিল,

কি হয়েছিল আজ,

ঘরঘর শব্দ করে শহরে নামলো যন্ত্রদাণব।

 

ট্যাংক,সাজয়াযান,

সুসজ্জিত মেসিনগান,কামানের গোলায়,

মৃত্যু আর আগুন।

 

বিভৎস কুণ্ডলী পাকীয়ে

উর্দ্ধাকাশে মানুষের আত্মার সাথে মানবতা মিলায়।

 আকাশের ঠিকাণায়,আল্লাহর আরশ কাঁপায়।

 আজ সেই রাত।

 

অন্ধকার হার মানে

মহাহত্যার কালো তান্ডবে।

 

আজ সেই রাত।

মানুষের তাজা রক্তে ভরেছে নদী।

 জনতার গোলাপ বাগানে পশুদের দাপট।

 

আর্তনাদ আর চিৎকার কান্না,

বিষাদ সিন্ধু অবধি।

 অন্তিমকাল অন্তিমসময়, অন্তিমবেদনারাশি।

 

মিলেছে পদ্মা- মেঘনা- যমুনা- মধুমতি।

আকন্ঠ বিষপানে বাঙ্গালীর প্রতিরোধ।

 

অগ্নি মুরতি

আজ এই কালোরাতে ছড়িয়েছে অরুন্ধতী।

 

লাখো শহিদাণ মুহুর্তে,

হয়ে গেল প্রতিরোধ যোদ্ধা।

 

আজ এই রাতে আমাদের শুরু,

শুরু হলো স্বাধীনতা।

 

কালো রাত বিধির্ণ করে আনা সুবর্ণ প্রভাত।                         

শোকের কালো রাত বিধির্ণ করুক ষোল কোটি হাত।

Post a Comment