লেখক সমাজ রচনা।বাংলা ভাষা ও সাহিত্য রচনা।সাহিত্য ও সমাজ প্রবন্ধ রচনা


প্রবন্ধ : " লেখক সমাজ "
শেখ আক্তারউজ্জামান দরগাহপুরী(বঞ্চিত)মুক্তিযোদ্ধা

 কবি, সাহিত্যিক, লেখক সাংবাদিক এই চার শ্রেণীর মানুষের জীবন আর অন্যান্য পেশার মানুষের জীবন এক সমান নয়। ইনারা দেশ দেশের জনগণের স্বার্থে লেখালেখি করে থাকেন। কেউ কেউ বিনিময়ে কিছু অর্থ উপর্জন করলেও বেশিরভাগ নিঃস্বার্থে। অনেকে এই লেখালেখির পেছনে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে থাকেন। লেখার জন্য তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। মেধা খাটাতে হয়। মানব কল্যাণ করা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা, মানুষের মঙ্গল করাটাই থাকে প্রত্যেক লেখকের লেখার মূল উদ্দেশ্য।

প্রত্যেকটা মানুষের উদ্দেশ্য থাকে কি ভাবে বড়লোক হবেন,ধনী হবেন, মানুষের কাছে সম্মানী হবেন। কিন্তু উল্লেখিত চার শ্রেণীর মানুষের আশা ভিন্ন। তাদের আশা কিভাবে সমাজে দেশে ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবে। কিভাবে লিখলে একজন অত্যাচারীর হাত থেকে আরেকজন অসহায় মানুষ রক্ষা পারে। তার লেখা দেশবাসী পাঠ করে কিভাবে উপকৃত হতে পারে।

শিক্ষিত লোকের সংখ্যা দেশে বর্তমান শতকরা নব্বই এর কাছাকাছি হলেও লেখালেখির অভ্যাস কিন্তু হাজারের মধ্যে একজনেরও কম হবে।

কবি,সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক সাংবাদিকতা নিয়ে আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানশক্তি প্রয়োগে অল্পকিছু আলোচনা করতে চাই।।

 আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে কিন্তু ওই চার শ্রেণীর মানুষদের অবদান অপরিসীম। সত্য কথা লেখার কারণে, ন্যায় কথা জনগণের কাছে তু্লে ধরবার অপরাধে ওই চার শ্রেণীর লেখক সমাজকে অনেক লাঞ্ছনার স্বীকার হতে হয়েছে। জেল, জুলুম এমনকি জীবনও দান করতে হয়েছে অনেককে। সর্বযুগে অন্যায়কারীর প্রধান দুশমন হয়ে থাকেন লেখক সমাজ। কারণ লেখক তার লেখনীর মাধ্যমে জালিমের আসল রূপ জনসমাজে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরে থাকেন। তাই দেশ জাতির কল্যাণে এমনকি সমগ্র বিশ্ববাসীর কল্যাণে লেখক সমাজের মূল্য অপরিসীম।  কবিতার ছন্দে বলে যাইঃ

   " হাজার্ শহীদের রক্তের চেয়ে,

                           নয় কোনো অংশে কম।

একজন ন্যায়নীতিবান লেখকের,

                           কলমের কালির দাম।"

লেখক সমাজ জীবদ্দশায় উচিৎ মূল্যায়ন খুব কম সংখ্যকে পেয়ে থাকেন।

লেখকের লেখার কারণে জনসমাজে চিহ্নিত হয় কারা অপরাধী। বিনাদোষে দোষি যারা পায় মুক্তি। লেখক সমাজ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়ক আবার তাদের হাতে লেখক সমাজের লাঞ্ছিত হওয়াটা বড়ই দুঃখ জনক। একজন লেখকের কাছে কোনো দেশে কোনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকে অবৈধ অস্ত্র,অবৈধ টাকা বা কোনো প্রকার নেশাদ্রব্য উদ্ধার করতে সমার্থ হন নাই। লেখকের হাতিয়ার হলো লেখকের অস্ত্র হলো ক্যামেরা, মোবাইল,খাতা কলম কিন্তু কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি বা কোনো পোশাকধারী লোকের বিরুদ্ধে যখন সাংবাদিকের লেখা চলে যায় তখন সাংবাদিককে তাদের হাতে লাঞ্ছনার স্বীকার হতে হয়। মোবাইল কেড়ে নিয়ে যায়। থানায় ধরে নিয়ে যায়। অসুস্থতাজনিত কারণে বিছানায় শায়িত তবুও তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতির মধ্যে দিন কাটাতে হয়। অথচ লেখকের অপরাধ তিনি সত্যকথা প্রকাশ করেছেন। তিনি ঘুষখোর কর্মকর্তাকে ঘুষখোর হিসেবে তার লেখার মাধ্যমে জনসমাজে চিহ্নিত করেছেন। তিনি চোর নন ডাকাত নন তবুও তাকে নিরপরাধ হওয়া সত্তেও হতে হয় অপরাধী। উন্নতদেশে,সভ্য সমাজে একজন লেখককে অনেক সম্মানিত ব্যক্তি বা উচ্চস্তরের মানুষ হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।।

 লেখককে স্বাধীনভাবে লিখতে দেয়ার (ধর্মবিরোধী বা অন্যায় ভাবে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়) অর্থ হলো সরকারের সম্মুখে দেশের কোথায় কোন অসুবিধা তা তুলে ধরা। জনগণের দুঃখ দুর্দশার কথা অবহিত করা।অবহেলিত অঞ্চলের নানান সমস্যার কথা ফেসবুক পত্রপত্রিকার মাধ্যমে প্রকাশ করা। আমার মনে হয় জনস্বার্থে,দেশের স্বার্থে সম্মনিত লেখক সমাজের নিরাপত্তার জন্য সরকারিভাবে আইন প্রয়োগের প্রয়োজন রয়েছে।

" কোনো লেখককে সরকারী বা বেসরকারী কোনো ব্যক্তি অপদস্থ করতে পারবেন না।

কোনো লেখককে কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে বন্দী করবার প্রয়োজন দেখা দিলে একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে অবশ্যই সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে কারণ লেখক সমাজের লোক দেশের উচ্চ মর্যাদাশীল ব্যক্তিত্ব।

তা হলেই কেবল সম্মনিত লেখক সমাজের প্রতি সম্মান দেখানো হবে। তা না হলে লেখককে সত্য লেখবার অপরাধে যে কোনে সময় অপমানিত হতে হবে। তাতে করে দেশের আসল চিত্র সরকারের সম্মুখে, জাতির সম্মুখে উঠে আসতে বাঁধাগ্রস্ত হবে। দেশের সাধারণ জনগণ থেকে যাবে অবহেলিত কেউ তাদের কথা না লেখার কারণে। কোনো লেখা আপাতত দৃষ্টিতে সরকারের সমালোনা দেখা গেলেও সেটা রাষ্ট্রদোহী নয়।সরকারের কর্মকাণ্ডে সমালোচনা পরোক্ষভাবে সরকারকে উপকার করা। বিরোধিতা করা নয়। কারণ আসল কথা জানতে পেরে সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন সহজে। আমার একান্ত দাবী লেখকের লেখাকে,সাংবাদিকের সাংবাদিকতাকে আমরা স্বাধীন করে দেই। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ, বস্তুনিষ্ঠ গঠনমূলক লেখা দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি। আসুন আমরা লেখক সমাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করি। এবং কবি লেখকদের জন্য সম্মানি ভাতা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রদান করবার ব্যবস্থা করি।

কবি লেখক সমাজের দাবী সম্মনি ভাতা নিকটবর্তী সময়ের মধ্যে সরকার প্রদান করবেন সেই আশা রাখি।।

শেখ আক্তারউজ্জামান দরগাহপুরী(বঞ্চিত)মুক্তিযোদ্ধা।

                    সাতক্ষীরা। বাংলাদেশ।



Post a Comment