মোর্শেদা চৌধুরী এ্যানি এর নতুন কবিতা।সব দোষ নন্দ ঘোষ।কী অদ্ভুত মৃত্যুর স্বাদ

কী অদ্ভুত মৃত্যুর স্বাদ!
মোর্শেদা চৌধুরী এ্যানি

মৃত্যুরে তুই এতই সত্য এতই কঠিন অদ্ভুত চিরন্তন,

তোর কথা মনে হলে ছিড়ে ফেলতে চাই সব বন্ধন।

 

মিথ্যা দুনিয়ার মিথ্যাই স্বপ্ন মিথ্যাই যেনো সবকিছু,

মৃত্যুর কাছে ভেদাভেদ আছে কি সমাজের উঁচুনিচু?

 

কত-না হিংসা-বিদ্বেষ; কত-না কাটাকাটি-মারামারি,

কত-না নিন্দা-ঘৃণা; কত-না ছিটারি এবং বাটপারি!

 

শ্বশুর-শ্বাশুড়ি তীব্র কষ্ট করে সংসারটা জুড়ে রাখে,

বৃদ্ধ বয়সে অসুস্থ হলে কেউবা ঘৃণার চোখে দেখে!

 

প্যারালাইসিস এর রোগী হলেতো কষ্টের নাই শেষ,

রোগে-শোকে ঔষধ পত্রের উচ্চমূল্যও থাকে বেশ।

 

ছেলে মেয়ের ঠেলাঠেলির প্রতিযোগিতা থাকে চড়া,

বউ মায়েরা ঝগড়া করে কেনো শুধু শুধু খরচ করা?

 

আমাদেরতো বাচ্চা কাচ্চা আছে করতে হবে মানুষ,

বৃদ্ধ হইছে মারা যাবে নাই কি তোমার স্বাভাবিক হুস?

 

আবার কারো মন আছে তো ধন দিলেননা বিধাতা,

ইচ্ছা থাকলেও করতে পারেন না ভালো চিকিৎসা।

 

কেউ বা আবার খুব নিন্দা করে গায়ের চামড়া নিয়ে,

আধুনিক বউ-নাতি-নাতনির মতো হয়নি ওঁরা বলে।

 

কথায় কথায় খোঁটা মারে কামাই করে নিজের স্বামী,

অর্থ-সম্পদের ভাগ পাবে কেনো ননদ-শ্বশুর-শ্বাশুড়ি


সব দোষ নন্দ ঘোষ
মোর্শেদা চৌধুরী এ্যানি


যাঁরে দেখতে নাড়ি তাঁর নাকি চলন বাঁকা,

কথায় কথায় দোষ ধরে খুব অপমান করা।

ভালো চললেও তাঁর দোষ খারাপ চলেও দোষ,

ভালো কথাতেও দোষ খারাপ কথাতেও দোষ।

আগে চললেও খারাপ পিছে পড়লেও খারাপ,

সহযোগিতা করলে খারাপ না করলে নারাজ।

মিষ্টি ভাষাতেও মনে কষ্ট; তিক্ত কথাতেও নষ্ট,

তরকারিতে লবণ কম হলেও মিলছে শত দুঃখ!

মিষ্টান্নে চিনি দিলেও মন্দ; না দিলেও অপছন্দ,

শিশির ভেজা দূর্বা ঘাসে হাটলেও মিলেনা ছন্দ।

কোকিল সুরে গান গাইলেও নাকি বলে পাগল,

মাতাল হাওয়ায় দোল খেলেও নাকি  বলে চঞ্চল।

দু'হাতে আঁগলে ধরে রাখলেও বলে থামনা এবার,

ছেড়ে দিলে বলে মুখে বুঝি চুনকালি মাখলি আবার।

সুখ পাখিকে আপন করতেই উড়াল দিয়া দূরে যায়,

শান্তি দেখলেই কেমনি জানি সবাই তাঁরে ভয় পায়।

হোঁছট খেয়ে পরলেও কারো মনে সমবেদনা নেই,

আবার ব্যথা ফেলেও বলে অভাগী তুই কলঙ্কময়ী!

একেই অবাক চোখে বলে থাকে সব দোষ নন্দ ঘোষ,

হে দয়াময় কবে ফিরবে বলো ঐ অদ্ভুত মানুষের হুস।

Post a Comment