ইসলামী শরীয়াহ ও আইন মোতাবেক দ্বিতীয় স্ত্রীঃ
বাংলাদেশের
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ অনুযায়ী একজন পুরুষের দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হলেও নিষিদ্ধ করা হয়নি। আইন অনুযায়ী দ্বিতীয় বিয়ে করতে হলে প্রথম স্ত্রী ও ইউনিয়ন পরিষদের
চেয়ারম্যানের নেতৃত্বাধীন শালিশী পরিষদের অনুমতি নিতে হবে। স্ত্রী অনুমতি দিলে শালিসি পরিষদ অনুমতি দিয়ে দিবে। তবে যৌক্তিক কারণ থাকলে স্ত্রী অনুমতি না দিলেও শালিসি
পরিষদ দ্বিতীয় বিয়ের জন্য অনুমতি
দিতে পারে।
যদি
শালিসি পরিষদের অনুমতি ছাড়াই স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেন তবে কাজটি শাস্তিযোগ্য হলেও বিবাহটি বাতিল হবেনা। এই মামলায় আসামীর
১ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা ১০ হাজার টাকা
অর্থদণ্ড অথবা উভয় দন্ড হতে পারে। তবে এই ধরণের মামলা
আদালতে খুবই অপ্রচলিত। কারণ স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েই সাধারণত পুরুষরা দ্বিতীয় বিয়েটি করে থাকেন।
ইসলামী
শরিয়াহ অনুযায়ী স্বামী তার স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই প্রয়োজন মনে করলে দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারেন। এমনকি প্রয়োজন মনে করলে একই সাথে চারজন স্ত্রী বর্তমান রাখতে পারেন। পবিত্র কোরআনে শারিরীক ও আর্থিক সক্ষমতা
থাকলে এবং সকল স্ত্রীকে সমান সুযোগ ও মর্যাদা দান
এবং তাদের প্রতি জাস্টিস তথা ন্যায়বিচার করতে পারলে একাধিক স্ত্রী রাখার বিধান রাখা হয়েছে। স্ত্রীদের প্রতি ন্যায়বিচার করতে না পারলে এক
স্ত্রী রাখার প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মোদ্দাকথা হল একাধিক বিয়ে
করতে হলে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নেওয়া নিষ্প্রয়োজন এবং স্বামীর অবশ্যই স্ত্রীদেরকে আলাদা বাসস্থান ও সুযোগ সুবিধা
দেওয়ার আর্থিক সামর্থ্য থাকতে হবে।
বিয়ের
কাবিন রেজিস্ট্রি বাধ্যতামূলক হলেও ধর্মীয় রীতিতে তা আবশ্যক নয়।
সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ইজাব কবুল এবং দেনমোহর প্রদান করাই যথেষ্ট। তবে সামাজিক সুরক্ষা, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যতে দেনমোহর প্রাপ্তি, খোরপোষ প্রদান, স্ত্রী ও সন্তানের স্বীকৃতির
জন্য কাবিন রেজিস্ট্রি করতে হবে। কাবিননামার সত্যায়িত প্রতিলিপি ব্যক্তিগতভাবে সংরক্ষণে রাখা উচিত।
ইবরাহীম
সরকার
এডভোকেট,
ঢাকা জজ কোর্ট
এবং সুপারিশপ্রাপ্ত সহকারী জজ।