সাহস পাইনি চোখ মেলাতে
ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল
"বছর চারেক পর" :সৃজা ঘোষ কবিতায় প্রভাবিত।
আজ কেমন অপরাধী লাগে আমায়
যদি তখন একটু বুঝতাম তোমায়!
একটা যন্ত্রনা কুরে কুরে খায়
যদি একটু সময় দিতাম সম্পর্কটায়!
বুকের ভেতর ক্ষতটা দেখাইনা আর
আজও ভালোবাসি তোমায়,বলিনা লোকলজ্জার ভয়ে।
বিয়ে করেছি কন্যা সন্তান একটি আছে
নাম রেখেছি ভালোবেসে তোমার ডাকনামে।
এখন ঠোঁটে হাসিটা ধরে রাখি
বুঝতে দেইনা বুকের ব্যাথা, বলি দিব্যি ভালো আছি।
তুমিও আমায় দেখে কেমন সুখী মনে করলে !
তুমিও পারলে না ধরতে ব্যাথা, চোখের সুপ্ত কথা।
তুমি বলেছিলে আমি শান্ত হয়েছি খুব এখন
সত্যি দুষ্টুমি বায়না এসব মানায় না এখন।
তোমার কাছেই করতাম দুষ্টুমি বিভিন্ন অভিমান
বিচ্ছেদের পর শুধুই নিজের উপর হয় অভিযোগ।
চোখ দুটো নাকি হয়েছে আমার সংসারী
বিয়ের পর আসলে কাঁধে পড়েছে দায়িত্ব ভারী।
তুমি অনেক কিছুই জানতে চেয়েছিলে
আজ সব বলব লোকলজ্জা দূরে সরিয়ে।
তোমার প্রিয় গন্ধটা আজও মাখি
বাড়ি ফেরার পথে ভুলে আজও রজনীগন্ধা আনি।
তোমার মত সে অভিমান করে না
শান্ত গোছের, তেমন ঘোরার বায়না ধরে না।
স্নানের পরে ভেজা চুলগুলো মেলেনা আমার চোখে মুখে
বায়না করে না রঙিন চুড়ি ,নূপুর পরব হাতে পায়ে।
লাল টিপ পরে না তোমার মত করে
আমি বলার পর এখন পরে কপাল জুড়ে।
এখন বাংলা সাদা কালো ছবিগুলোও দেখি
তুমি যাওয়ার পর দেখিনা আর বাজে ছবি ।
ঠাণ্ডার ধাঁচ রয়ে গেছে জীবনের অঙ্গ হিসেবে
যেমনটা তুমি আছো না থেকেও আমার জীবনে।
এখন আর মাথা মুছিনা শাড়ির আঁচলে
যেমনটা তুমি মোছাতে ছোট্ট বাচ্চার মত করে।
আজও ভালো লাগে কাব্য করা মেয়ে
তবে সবার আগে তোমার কথাই মনে আসে।
এখন আর দেরিতে ঘুম থেকে উঠিনা
নিজেই উঠি সবার আগে,যেমন করে উঠতে তুমি।
সে বৃষ্টি ভালবাসে তবে ভিজতে জোর করে না
নিজের মতোই সে কাটায় একাকী।
তোমায় বারণ করতাম ভিজবোনা বৃষ্টিতে
অথচ এখন খুব ভিজতে মন চায় বৃষ্টি হলে।
আজও মাথা ব্যথা হয়,যন্ত্রণায় কাতরাই
তবে আবদার রাখিনা মাথা টেপার।
তোমার মত অমন জাপটে ধরে না
চুলে তেল দিয়ে মাথা বাঁধতেও বলেনা।
না,নেই তার মন খারাপের ব্যামো
এখন আর রাগ ভাঙাতে হয় না ভালোবেসে।
হয়ত প্রাপ্ত দেখায় আমায়
এখন আর নাক কুঁচ কাই না।
যা পাই তাই পরি,নেই এত বাছাবাছি
যা দেয় তাই খাই করিনা বাড়াবাড়ি।
এখন আর করিনা আড়ি
মান অভিমান হয়না তেমন বেশি।
আজ আর ছেড়ে আসার অভ্যাস নেই
তোমায় ছাড়ার ঘটনা আজও হৃদয় পোড়ায়।
তার খারাপ কিছু হলে মাথায় হাত বুলিয়ে
সান্তনা দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেই।
সে কিছুই চায়না মুখ ফুটে
দুঃখ পেলে লুকিয়ে রাখে খুব গোপনে।
সে খুব একটা বেশি কথা বলেনা
এখন বুঝি তোমার অনুপস্থিতিটা।
এখন আর নালিশ করিনা
অভিমান বোঝার নেই যে লোকটা।
নতুন মানুষ কিন্তু আমায় ভালবাসে
আমিও চেষ্টা করছি ভালোবাসতে।
এখনও রাত জাগি খুব গোপনে
কবিতাও লিখি তোমায় নিয়ে।
যেমনটা তুমি দেখেছিলে ভিড়ের মধ্যে লুকিয়ে
আমিও দেখেছি তোমাকে,সাহস পাইনি চোখ মেলাতে।