ইশ্বরের ক্ষোভ আর ক্রোধ। ঈশ্বর নিয়ে রচনা

ইশ্বরের ক্ষোভ আর ক্রোধ
[জালাল কবির]

ওহে পৃথিবীর বির্বতিত মানুষ জাতি! যৌনতা আর ভালোবাসা নিয়ে তোমরা কেন এত হিংসা বিদ্বেষ আর জটিলতা সৃষ্টি কর ? তারপর ক্রোধে উন্মত্ততায় জিঘাংসায় খুন খারাবিতে জড়িয়ে পড় ? এর পেছনে কে দায়ী ? আমি তো দেখছি এর পেছনে তোমাদের পূর্ব পুরুষদের মন থেকে তৈরি করা কালচার ও তাদের সহযোগিরা দায়ী। পাপ হয়ে যাচ্ছে, সমাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ইজ্জত চলে যাচ্ছে এই তোমাদের অভিযোগ। অথচ দুনিয়ার কুকর্ম করে যাচ্ছ সেখানে পাপ দেখতে পাও না। তাই নারীকে যেমন ইচ্ছে তেমনভাবে করে যাচ্ছ শারিরীক নির্যাতন আর নানাবিধ অপমান। তাদের পাথর মেরে হত্যা করছো, খতনা বা ‘সারকামছেশানের’ নামে যৌনাঙ্গ কেটে দিচ্ছ। নারী অলক্ষী, ডাকিনী, যোগীনি, তাই প্রেতাত্মার দোষ চাপিয়ে হত্যা আর নির্যাতন করে যাচ্ছ সেই লৌহ যুগের আগে থেকেও। একটি শিশু জন্মদানের ১০% কষ্টের যাতনাও তোমরা বুঝতে চাও না। অপরিশোধিত ধর্ম আর ভুলশিক্ষার কারণে নারীকে তোমরা দেখাওনি আলোর পথ। আমি বলি সেক্স বা যৌনতা বিষয়টাকে কেন তোমরা সহজভাবে গ্রহণ কর না ? ভেবে দেখ, যদি যৌনতার কামনা বাসনা বা কার্যকারিতা তোমাদের মনে ও শরিরে ঢুকিয়ে না দিতাম, তাহলে পৃথিবীতে তোমাদের কোনও বংশবিস্তার হতো না। তোমরা এতদিনে হয়ে যেতে বিলুপ্ত এক প্রজাতি। তোমরা সেক্স বা যৌনতা নিয়ে যে দৌরাত্ম কর, যে লোভ ও হিংসায় নিজের জীবনকে তছনছ কর, তা বনের কোনও পশুও করে না। তোমরা কি বনের পশু থেকেও নিকৃষ্ট ? তাই কে কার সঙ্গে প্রেম করেছে এটা নিয়ে তোমাদের এত মাথা ব্যথা কেন ? কেন অপরের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তোমাদের এত আগ্রহ ? কেন অপরের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করার জন্য কূ-মনোবৃত্তি মনে ধারণ করে মুখিয়ে থাক ? তোমরা সেক্সকে লোক দেখানো ঘৃণা কর, সাধুও সাজো, আবার সেক্সের জন্য উন্মাদ হয়ে বাচ্চা উৎপাদন করতে করতে পৃথিবী নামের গ্রহটির দুর্দশা বাড়িয়ে তুলেছো। চেয়ে দেখ পৃথিবীতে আর কোনও প্রজাতির এত বংশবিস্তার নেই। পৃথিবীর আর কোনও প্রজাতি তোমাদের মত এত যুদ্ধ বিগ্রহ, এত হত্যা খুন খারাবি করেনি। করেনি পৃথিবী নামের গ্রহটির প্রাকৃতিক সকল সম্পদের তছনছ কিংবা প্রাকৃতিক পরিবেশের এত দুষণ। তোমরা যৌনতা বা সেক্স নিয়ে মুখের ভাষায় ঘৃণা এবং সাধুতা দেখাও আবার গোপনে ও আড়ালে সেক্স এর জন্য উন্মাদ থাক। এহেন চরিত্রের জন্য বলা যায় তোমাদের থেকে আর ভণ্ড বজ্জাত জাতি কোথাও আছে কি ? ধর্ষন ছাড়াও সেক্স চুক্তির জন্য বিবাহ নামক পদ্ধতি সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছো। তারপর অবাধ যৌন-অত্যাচারের সুযোগে তোমরাই পৃথিবীতে মানুষের ঢল নামিয়েছ। এখন তা আর সামাল দিতে পারছো না। এখন পৃথিবীতে আর মানুষ জন্ম নিচ্ছে না, জন্ম নিচ্ছে কূটকৌশলের চালাকিতে ডিজিটাল ডাকাত শিশু। ব্যবসা, ফ্যাশন, বিলাসিতা আর আধুনিকতার নামে শুধু শোষণ ডাকাতি আর শোষণের পলিসি ছাড়া কী আছে তোমাদের জীবনে ? তোমাদের দৌরাত্মের কারণে কোথায় আছে নিরীহ পশুপাখি অর্থাৎ বহুজাতিক জীব বৈচিত্রের নিরাপত্তা ? কোথায় আছে ব্যক্তি স্বাধীনতা ? কোথায় আছে সুষ্ঠু বিচার ? কোথায় আছে মানবতা ? চারিদিকে শুধুই তো সবলের উপর দুর্বলের অত্যাচার। না হয় কৌশলের আওতায় শুধু শোষণ আর শোষণ।

Post a Comment