প্রবন্ধ
বর্তমানের কুরবানী
মো হাছান শরীফ কাব্য
বর্তমানে কুরবানি করার মানুষ অনেক বেশি, ফকির মিসকিনদের থলের বদলা বস্তা নিতে হয় কুরবানের মাংস ভরে নিতে। যারা কুরবানী করে তাদের চেয়ে অন্যদের বাড়িতে গোস্তের পরিমাণ বেশি হয়। তার কারণ হলো কুরবান করার মত মানুষ আমাদের দেশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে উপর ওয়ালার কাছে শোকর করা চাই।
আমি এ প্রবন্ধে কুরবানকে কেন্দ্র করে কোন কুরআন হাদিসের দলিল দিবোনা, তুলে ধরবো বর্তমানে কুরবানের কতগুলো বাস্তবিক চিত্র। যেগুলো আমাদের সমাজে ঈদুল ফিতরের সময় যেমন রমজানে নামাজ কালাম বাদ দিয়ে কেনাকেটায় সবাই ব্যাস্ত থাকে তেমনি কুরবান আসলে কুরবানের পূর্বে বা পরে কী আমল করতে হবে? তা না করে গরু কেনাকেটায় ব্যস্ত সবাই। তার মানি আমি গরু কিনতে পারবেনা বলছিনা। এটাই বলতে চাচ্ছি, একটা বিশ-ত্রিশ হাজার টাকার গরু কিনার জন্য অনেকে দশ-বিশটি বাজার ঘোরে দর কষাকষি করে, সাথে নিয়ে যায় দশ-বিশজন সদস্য। রশিতে ধরার জায়গাও থাকেনা। এদিকে গরুটি ভয়ে নিজেই মানষিকভাবে কুরবানী হয়ে যায়। তার মধ্যে ছেলেপোলেরা গরুটি নিয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে গোবরে পড়ে। এসব যেনো হাস্যকর অবস্হা।
কুরবান করার মত যেসব মানুষ আমাদের এলাকায় আছেন, তাদের অধিকাংশ টাকা, অসৎ পথে আয় করে। আর এসব টাকা দিয়ে গরু ক্রয় করতে গিয়ে প্রতিযোগিতা দেয় বাজারে। বর্তমানে গরু কিনেও নাকি সুনাম অর্জন করা যায়। তাইতো দেখি বাজারের সবছে বড় গরু কিনে পত্রিকা বা অন্য মাধ্যমে প্রকাশ করা হচ্ছে। আর বর্তমানের ছেলেপোলে সেলফি তুলে ফেইজবুকে আপলোড দিয়ে মন্তব্য পেয়ে ধন্যবাদ দিচ্ছে। অন্যদিকে দেখা যায় চালের ডোলায় ইঁদুর পড়ে নাক পাঠাচ্ছে, এদিকে কুরবানী করার জন্য স্বর্ণ বাঁধা দিয়ে বা সুদের টাকা ধার নিয়ে কুরবানী করতেছে। কারণ কুরবানি না করলে নাকি তার সম্মান নষ্ট হবে, ৩, ৪ ছেলের জনক বলে কথা। অন্তত এতটুকু বলতে পারি এসব করে কুরবানি করলে কুরবানি হবেনা। তার জন্য প্রমাণ দেওয়া লাগবেনা আপনারা অতি সহজে বোঝতে পারবেন। আবার সমাজে দেখা যায় কর্জ যেনো কামড়ায়ে খাচ্ছে, আর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য কর্জ না দিয়ে কুরবানী করতে ব্যাস্ত হয়ে যায়।ফলে কর্জদাতার বকুনি খাওয়া নিত্য রুটিন হয়ে গেলো তার! আমার প্রশ্ন হলো, অন্যের কর্জ না দিয়ে বকুনি শুনে কুরবানি করার জরুরত কোথায় পড়লো বোঝতে পারিনা? সামর্থ না থাকলে কেনো কুরবানী করবে? প্রথমততো মানুষের সাথে লেনদেন শেষ করা চাই! এত সব সমস্য নিয়ে কুরবানি করতে শরিয়তে ও বারণ করেছেন। আবার দেখা যায় সামর্থ থাকা সত্বেও কুরবানী করেনা। ফকিরের বেশ ধরে, এরা যদি কোন কারণে কোনদিন কুরবানী করে, তাহলে তাদের কুরবানী হবে কী না সন্ধেহ আছে। কারণ তারা কোন সময় কুরবানী করলেও মন থেকে কুরবানী করবেনা। অন্য কোন কারণে করবে, হয়তো সন্তানসন্ততির আকিকা দেওয়ার প্রয়োজনে।যার বাস্তবতা আপনি সমাজে উপলব্দি করলে বোঝতে পারবেন।
এবং কুরবানের দিন দেখতে পারবেন, গরু জবেহ করার সময় গরু ধারণ কারীর চেয়ে ছবি ধারণকারী বেশি হয়ে যায়। এবং কেউ সেখানে নেতাগিরি করে বসে। কখনো কখনো নিজের গরু নিজে জবেহ করে ইমাম সাহেবের পাওয়ানা হক দেয়না।
এছাড়া আরো অনেক অপকর্ম হয় বর্তমানের কুরবানকে কেন্দ্র করে। তা'সব বলতে গেলে আরো অনেক বলা যাবে
সুতারাং বোঝা গেল বর্তমানের কুরবান কতটুকু গ্রহণযোগ্য? এ প্রশ্নের জবাব আপনাদের অতি সহজে বোঝা আসবে আসা করি। যেসব কথা গুলো তুলে ধরলাম তা অনেক সহজ শব্দে বা সহজ ভাষায় তুলে ধরলাম। এবং আবারো কী আগামী কুরবানের জন্য অপেক্ষা করতে হবে? আরো অপকর্ম দেখার জন্য। এ হতাশায় রইলাম। এবং আপনাদের সহায়তায় এসব অপকর্ম বিলুপ্ত করতে চাই।