প্রেমের চিঠি। সেরা চিঠি। প্রেমিকার জন্য চিঠি

প্রেমের চিঠি 
জয়ন্তী ভারতী

ওগো প্রিয়,
প্রেমের চিঠি পাঠিয়ে দিলাম
সুগন্ধি রঙিন খামে,
উত্তর ঠিক পাবো জানি
তোমার দেওয়া ডাক নামে।
ইচ্ছেরা মেলেছে আজ পাখনা
দূর বহু দূরের সীমানা,
মন আজ বাঁধন হারা
জানিনা কি তার নিশানা।
এ আমার কি হলো আজ! 
আগে তো কখনো কোনদিন হয়নি এমন,
সেদিন মধ্য রজনীতে ঘুম থেকে তুলে
ভালোবাসার গল্প শুনিয়ে ছিলে আমায়।
কপালে এঁকেছিলে ভালোবাসার গভীর চিহ্ন,
আগে তো কোনদিন এ গল্প শোনাও নি,
কোথায় শিখলে তুমি? 
কে তোমায় শেখালো? 
ফুটে থাকা পলাশীর রং লেগেছে আমার শরীরে
মনে বেজে উঠেছে ভায়োলিনের সুর,
খুব ইচ্ছে করছে তোমার হাতটি ধরে
নীল সমুদ্রের পাশে বসে ঢেউ গুনতে।
ইচ্ছে করছে শান্ত পাহাড়ের বুকে
তোমার সাথে গলা ছেড়ে গান গাইতে।
ইচ্ছে করছে ঝমঝম বৃষ্টিতে
তোমার সাথে নৃত্যের তাল তুলতে।
আরো কতো কতো ইচ্ছেরা
যারা মনের ঘরে বন্দী হয়েছিল,
বন্ধ দরজা ভেঙে মুক্ত আকাশে
ডানা মিলতে চাইছে।
চাওয়া-পাওয়ার হিসেব ভুলে
তোমাকে চিৎকার করে বলতে 
ইচ্ছে করছে------------------
ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি
                    তোমায়
               খুব ভালোবাসি।
                                             ইতি,
                                                      তোমার প্রিয়া।


অণুগল্প 
অনুরাধা দে 


তালডাঙাতে থাকে সাঁওতাল মেয়ে মুলকি সোরেন। পড়াশোনা করে পাশের গ্রাম পলাশীর গৌরহরি সেন মেমোরিয়াল হাইস্কুলে। এইগ্রামে গৌরহরি সেনের বৈঠকখানা বাড়িতেই পোস্ট অফিস বসে। এখনকার কথা নয় তো ,বলছি সেই ১৯৭৪ সালের কথা। মুলকি স্কুল থেকে ফেরার পথে রোজ একবার করে পোস্ট অফিসে আসত। আশপাশের গ্রাম থেকে কত লোক এসে অপেক্ষা করত চিঠি,মানিঅর্ডার এসবের জন্য। আর মুলকি অপেক্ষা করত লাল ডাকবাক্সটা কখন খোলা হবে তার জন্য। ডাকবাক্সটা খোলা হলেই মুলকির ডাগর দুটি চোখে বিদ্যুৎ খেলে যেত। চকিত হরিণীর মতো ডাকবাক্সটাকে জড়িয়ে ধরে ঘুরতে থাকতো বনবন করে আর কীভাবে ওই লালবাক্সটার পেটের ভেতর থেকে চিঠি বেরিয়ে আসে সেটা দেখতো অবাক বিস্ময়ে..... কতরকমের চিঠি....নীলখাম,হলদে খাম,হালকা হলুদ রঙের কার্ড। তাদের কত নাম ...ইনল্যান্ড লেটার , পোস্টকার্ড, এমনি খামবন্দী চিঠি। 
                      মুলকি যখন ক্লাস ইলেভেনে পড়ে তখন তার মনে লাগে প্রেমের ছোঁয়া। গ্রামের ছেলে বলাই  মুখোপাধ্যায় তাকে বলত....
"কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,
কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক।
মেঘলা দিনে দেখেছিলেম মাঠে
কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ।"
গ্রামের লোক এই প্রেমকথা জানতে পেরে সভা বসিয়ে বিচার করে মুলকির বাবাকে একঘরে করার হুমকি দেয়। অপমান করে বলাইকে ছোটো জাতের কালো মেয়েকে ভালবাসার জন্য। বলাই মুলকিকে ভালবেসে আর তার পরিবারের কথা ভেবে গ্রাম ছাড়ে। কোথায় যায় মুলকি জানে না। কিন্তু ওই লাল ডাকবাক্সর পেট থেকে নীল খামে তার নামে চিঠি আসবে ভেবে ডাকবাক্সর সামনে কত্ত কত্ত দিন অপেক্ষা করেছে মুলকি। তারপর ....তারপর ...
 অপেক্ষা করতে করতে মুলকি আরো বড় হয়ে চাকরি নিয়ে মা বাবাকে নিয়ে চলে এল কোলকাতায়। এখানে ও লাল ডাকবাক্সের সামনে সে থমকে দাঁড়াত। তারপর চলে যেত অন্যপথে। এখন মুলকির বয়স হয়েছে তবুও রাস্তায় বেরোলেই ধুলোপড়া লাল ডাকবাক্স দেখলেই সে দাঁড়িয়ে পড়ে।
                         অনুরাধা দে




নার্গিস কে লেখা কাজী নজরুল ইসলাম এর চিঠি

কল্যাণীয়াসু,
তোমার পত্র পেয়েছি সেদিন নব বর্ষার নবঘন-সিক্ত প্রভাতে। মেঘ মেদুর গগনে সেদিন অশান্ত ধারায় বারি ঝরছিল। পনের বছর আগে এমনি এক আষাঢ়ে এমনি এক বারিধারায় প্লাবন নেমেছিল, তা তুমিও হয়তো স্মরণ করতে পারো। আষাঢ়ের নব মেঘপুঞ্জকে আমার নমস্কার। এই মেঘদূত বিরহী যক্ষের বাণী বহন করে নিয়ে গিয়েছিল কালিদাসের যুগে, রেবা নদীর তীরে, মালবিকার দেশে, তার প্রিয়ার কাছে। এই মেঘপুঞ্জের আশীর্বাণী আমার জীবনে এনে দেয় চরম বেদনার সঞ্চার। এই আষাঢ় আমায় কল্পনার স্বর্গলোক থেকে টেনে ভাসিয়ে দিয়েছে বেদনার অনন্ত স্রোতে। যাক, তোমার অনুযোগের অভিযোগের উত্তর দেই। তুমি বিশ্বাস করো, আমি যা লিখছি তা সত্য। লোকের মুখে শোনা কথা দিয়ে যদি আমার মূর্তির কল্পনা করে থাকো, তাহলে আমায় ভুল বুঝবে-আর তা মিথ্যা।
তোমার উপর আমি কোনো ‘জিঘাংসা’ পোষণ করিনা-এ সকল আমি অন্তর দিয়ে বলছি। আমার অন্তর্যামী জানেন তোমার জন্য আমার হৃদয়ে কি গভীর ক্ষত, কি অসীম বেদনা! কিন্তু সে বেদনার আগুনে আমিই পুড়েছি, তা দিয়ে তোমায় কোনোদিন দগ্ধ করতে চাইনি। তুমি এই আগুনের পরশমানিক না দিলে আমি ‘অগ্নিবীণা’ বাজাতে পারতাম না।
আমি ধুমকেতুর বিস্ময় নিয়ে উদিত হতে পারতাম না।তোমার যে কল্যাণ রূপ আমি আমার কিশোর বয়সে প্রথম দেখেছিলাম, যে রূপকে আমার জীবনের সর্বপ্রথম ভালবাসার আঞ্জলি দিয়েছিলাম, সে রূপ আজো স্বর্গের পারিজাত-মন্দারের মতো চির অম্লান হয়েই আছে আমার বক্ষে। অন্তরের সে আগুন-বাইরের সে ফুলহারকে স্পর্শ করতে পারেনি ।
তুমি ভুলে যেওনা আমি কবি, আমি আঘাত করলেও ফুল দিয়ে আঘাত করি। অসুন্দর কুৎসিতের সাধনা আমার নয়। আমার আঘাত বর্বর কাপুরুষের আঘাতের মতো নিষ্ঠুর নয়। আমার অন্তর্যামী জানেন (তুমি কি জান বা শুনেছ জানিনা) তোমার বিরুদ্ধে আজ আমার কোন অনুযোগ নেই, অভিযোগ নেই, দাবীও নেই।
তোমার আজিকার রূপ কি জানিনা। আমি জানি তোমার সেই কিশোরি মুর্তিকে, যাকে দেবীমূর্তির মতো আমার হৃদয় বেদীতে অনন্ত প্রেম, অনন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলাম। সেদিনের তুমি সে বেদী গ্রহণ করলেনা। পাষাণ দেবীর মতই তুমি বেছে নিলে বেদনার বেদিপাঠ … জীবন ভরে সেখানেই চলেছে আমার পূজা আরতি। আজকার তুমি আমার কাছে মিথ্যা, ব্যর্থ; তাই তাকে পেতে চাইনে। জানিনে হয়ত সে রূপ দেখে বঞ্চিত হব, অধিকতর বেদনা পাব, তাই তাকে অস্বীকার করেই চলেছি।
দেখা? না-ই হ’ল এ ধূলির ধরায়। প্রেমের ফুল এ ধূলিতলে হয়ে যায় ম্লান, দগ্ধ, হতশ্রী। তুমি যদি সত্যিই আমায় ভালবাস আমাকে চাও ওখান থেকেই আমাকে পাবে। লাইলি মজনুকে পায়নি, শিরি ফরহাদকে পায়নি, তবু তাদের মত করে কেউ কারো প্রিয়তমাকে পায়নি। আত্মহত্যা মহাপাপ, এ অতি পুরাতন কথা হলেও প্রেম সত্য। আত্মা অবিনশ্বর, আত্মাকে কেউ হত্যা করতে পারেনা। প্রেমের সোনার কাঠির স্পর্শ যদি পেয়ে থাকো, তাহলে তোমার মতো ভাগ্যবতী আর কে আছে? তারি মায়া স্পর্শে তোমার সকল কিছু আলোয় আলোময় হয়ে উঠবে।
দুঃখ নিয়ে এক ঘর থেকে অন্য ঘরে গেলেই সেই দুঃখের অবসান হয়না। মানুষ ইচ্ছা করলে সাধনা দিয়ে, তপস্যা দিয়ে ভুলকে ফুল রূপে ফুটিয়ে তুলতে পারে। যদি কোনো ভুল করে থাক জীবনে, এই জীবনেই তাকে সংশোধন করে যেতে হবে; তবেই পাবে আনন্দ মুক্তি; তবেই হবে সর্ব দুঃখের অবসান। নিজেকে উন্নত করতে চেষ্টা করো, স্বয়ং বিধাতা তোমার সহায় হবেন। আমি সংসার করছি, তবু চলে গেছি এই সংসারের বাধাকে অতক্রম করে উর্ধ্ব লোকে। সেখানে গেলে পৃ্থিবীর সকল অপূর্ণতা, সকল অপরাধ ক্ষমা সুন্দর চোখে পরম মনোহর মূর্তিতে দেখা যায়।
… হঠাৎ মনে পড়ে গেল পনর বছর আগের কথা। তোমার জ্বর হয়েছিল, বহু সাধনার পর আমার তৃষিত দুটি কর তোমার শুভ্র ললাট স্পর্শ করতে পেরেছিল; তোমার তপ্ত ললাটের স্পর্শ যেন আজো অনুভব করতে পারি। তুমি কি চিয়ে দেখেছিলে? আমার চোখে ছিলো জল, হাতে সেবা করার আকুল স্পৃহা, অন্তরে শ্রীবিধাতার চরণে তোমার আরোগ্য লাভের জন্য করুন মিনতি। মনে হয় যেন কালকের কথা। মহাকাল যে স্মৃতি মুছে ফেলতে পারলেন না। কী উদগ্র অতৃপ্তি, কী দুর্দমনীয় প্রেমের জোয়ারই সেদিন এসেছিল। সারা দিন রাত আমার চোখে ঘুম ছিল না ।
যাক আজ চলেছি জীবনের অস্তমান দিনের শেষে রশ্মি ধরে ভাটার স্রোতে, তোমার ক্ষমতা নেই সে পথ থেকে ফেরানোর। আর তার চেষ্টা করোনা। তোমাকে লিখা এই আমার প্রথম ও শেষ চিঠি হোক। যেখানেই থাকি বিশ্বাস করো আমার অক্ষয় আশির্বাদ কবচ তোমায় ঘিরে থাকবে। তুমি সুখি হও, শান্তি পাও, এই প্রার্থনা। আমায় যত মন্দ বলে বিশ্বাস করো, আমি তত মন্দ নই, এই আমার শেষ কৈফিয়ৎ।



চিঠির সূচনা   
আলমগীর হোসাইন 


     "চিঠি প্রেমীর অপ্রকাশিত অনুভূতি" 
যৌবনের উড়ো মনে কার না চিঠি লেখার অভ্যাস থাকে? কবে কখন কি ভাবে যে চিঠি লেখার অভ্যাস হয়ে গেলো বুঝতেই পারেনি এ অবুঝ মন। ভালোলাগা ভালোবাসার অনুভূতি মিশ্রিত চিঠি লিখে বইয়ের ভেতর রেখে দিয়েছিলো ক্লাস নাইনে পড়ুয়া কিশোর বয়সে?পরের দিন মুক্ত দানার অক্ষরে লেখা হাতের চিঠি ধরা পড়ে মা'র খেতে হয়ে ছিলো ভাইয়ের হাতেই।সেই মা'র খাওয়ার স্মৃতি চিহ্ন পিঠে দাগ হয়ে আজও বিদ্যমান। 
অজপাড়াগাঁয়ের ডানপিটে ছেলেটা বেড়ে ওঠা সময়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় স্কুল কলেজের সতীর্থদের কতো চিঠি লিখে দিয়েছে তার কোন হিসেব নেই।এক সময় চিঠি প্রেমী হয়ে উঠে সবার মাঝে।উল্লেখ্য চিঠি প্রেমী কাউকে অনুকরণ অনুসরণ করেনি কখনো।স্রষ্টার দেয়া মেধা প্রজ্ঞায় সৃজনশীল শব্দের গাঁথুনিতে ছন্দের মাধুকরী মোহমায়ায় চিঠি লিখে যেতো যৌবন যুবক। 
কতো বন্ধুর প্রেমের প্রেমিক,কখনো প্রেমিকা হয়ে দ্বৈত চরিত্রে চিঠি লিখে আদান প্রদান করেছে তা বেঁচে থাকা বন্ধু মহলে আজও স্বীকৃত।পূতপবিত্র সত্যাশ্রয়ী হয়ে অসাধ্য সাধন করাই ছিলো যার লক্ষ্য উদ্দেশ্য। চিঠি প্রেমী বন্ধু সময়কে ধারণ করে আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে চিঠির সাথে নিবিড় সখ্যতা গড়ে তোলে। 
লন্ডন প্রবাসী মামা মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী চাচা 
ভাইয়ের চিঠি আসতো ডাকযোগে।রোজ ডাকঘরে আসা যাওয়া চিঠি প্রেমীর অভ্যাস হয়ে গেলো। সাথে প্রতিবেশী প্রবাসী পরিবারের চিঠিও দেখতে হতো।মনের অজান্তেই ডাকপিয়ন,পোষ্ট মাষ্টার সহ সবার সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে বিশ্বস্ততা ও আস্থায়। বন্ধুকে লেখা পঙতি আজও স্মৃতিতে অম্লান হয়ে আছে। 
ওয়াদা শপথ ভালোবাসা দিয়েও 
       পারিনি দুটো জীবনকে 
মিলনের মোহনায় পৌঁছে দিতে 
       এ আমার অপারগতা নয়
পারলেই ক্ষমা করো হে বন্ধুবর।
এভাবেই চিঠির অপেক্ষায় প্রহর গুনে কতো রোমাঞ্চকর সময় ও স্বপ্নের জলাঞ্জলি শতসহস্র জীবনের তা শুধুমাত্র প্রেমিক মন বলতে পারবে। প্রেমিক প্রেমিকার চিঠি,বন্ধু বান্ধবীর চিঠি, ভাই বোনের চিঠি, চাচা চাচীর চিঠি, মামা মামীর চিঠি,বাবা মায়ের চিঠি,বয়ো সন্ধিক্ষণে সেই চিঠিপ্রেমী সোনার হরিণের পিছু ছুটে প্রবাসীর তালিকায় নাম লেখায় শুরু হয় প্রিয়তমাকে লেখা চিঠি। 
চিঠিপত্র নিয়ে নানাবিধ অভিজ্ঞতার আলোকে পুনঃ চিঠি লেখার নিমন্ত্রণ ফেসবুকের সফেদ পাতায় সাদরে গ্রহণ  নীলকলম সাহিত্য গ্রুপ হয়ে। 
লেখক 
আলো পাখি 
নীলকলম সাহিত্য সারথি
চট্টগ্রাম।



চিঠির যুগে প্রেম
রঞ্জিত দে


পড়ার খাতা থেকে পাতা ছিড়ে চিঠি লেখার কথা আজও ভীষণ ভাবে মনে পড়ে, 
কাউকে মনে ধরলে তখন অদ্ভুত রকমের একটা আবেগ মনের ভিতর গুমরে মরতো,
শেষ পর্যন্ত না পেরে ছেড়া খাতার পাতায় আকা বাকা ছন্দে চিঠি লিখে প্রেম নিবেদন করা, 
সেখানেও আবার লুকোচুরির ব্যপার ছিল, 
কারণ চিঠির কথা জানতে পারলে মায়ের খাটো লাঠি শুধু পিঠে পড়ার অপেক্ষায় থাকতো, 
কাউকে ভালোবাসতে গেলে এমন কতরকমের রোমাঞ্চকর জ্বালাই না ছিল সেসময়, 
চিঠি দিয়েও মনের মধ্যে শান্তি থাকতো না, 
কি জানি সে কি চিঠির জবাব দেবে নাকি কাউকে বলে দেবে চিঠির কথাটা!
তাহলে তো সবটাই শেষ,,,এসব ভেবে ভেবে ভয়ে সারাদিন নাওয়া খাওয়াই বন্ধ হয়ে যেতো, 
অবশেষে চেনা কারুর হাত দিয়ে উত্তর পাঠানোর মধ্যে দিয়ে নিরন্তর অপেক্ষার অবসান ঘটতো, 
এরপরেও আবার চিন্তা হতো সত্যি ঠিক কি লেখা আছে খামে বন্দী থাকা চিঠিতে! 
দূরু দূরু বুকে শতবার ভগবানের নাম নিয়ে খাম থেকে কাঁপা হাতে চিঠিটা বার করে কপালে একবার ঠেকিয়ে নিয়ে পড়তে শুরু করা, 
ছবির মতো মুক্তাক্ষরে লেখা উত্তরে প্রথমেই দারুন একটা কবিতার ছন্দ দিয়ে প্রিয়া লিখেছে প্রেমের প্রস্তাব সে গ্ৰহন করেছে, 
ব্যস তখন আবেগে অশ্রুজলে মনের ভিতর উথাল পাথাল হয়ে যাওয়ায় যে কি আনন্দ ছিল, 
ভালোবাসি ভালোবাসি কথাটা তখন চপল হরিনীর মতো সারা মন জুড়ে ছুটে বেড়াতো, 
সেই আবেগ ভরা চিঠি লেখাটাই আর নেই, 
গোপনে দেখা করে তার হাতে চিঠি দেওয়ার আনন্দটা আজ কোথায় যেন বিলীন হয়ে গেছে,

Post a Comment