বাশার আল আসাদ কে?।বাশার আল আসাদ জীবনী।হায়াত তাহরির আল শামস কি?

বাশার আল আসাদ জীবনী

বাশার আল-আসাদ হলেন সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট এবং একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যিনি ২০০০ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন। তার শাসনামল সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের পাশাপাশি গৃহযুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক সমালোচনার জন্য আলোচিত।

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

জন্ম: ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৬৫, দামাস্কাস, সিরিয়া।

পিতামাতা: তার পিতা হাফিজ আল-আসাদ ছিলেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট (১৯৭১-২০০০) এবং একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা। তার মা আনিসা মাখলুফ ছিলেন একটি সমৃদ্ধ ও প্রভাবশালী পরিবার থেকে।

শিক্ষা: দামাস্কাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিসিনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এর পর তিনি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে চক্ষু চিকিৎসায় বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ নেন।

শাসন ক্ষমতায় আসা

হাফিজ আল-আসাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে বাশার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তার বড় ভাই বাসেল আল-আসাদের মৃত্যুর পর বাশারকে উত্তরসূরি হিসেবে প্রস্তুত করা হয়।

শাসনামল

শুরুতে সংস্কার প্রচেষ্টা: ক্ষমতায় আসার পর বাশার অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেন।

গৃহযুদ্ধ: ২০১১ সালে "আরব বসন্ত" আন্দোলনের সময় বাশারের সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ শুরু হয়। এটি দ্রুতই সহিংস গৃহযুদ্ধে পরিণত হয়।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ: তার সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার এবং বিদ্রোহীদের প্রতি দমনমূলক পদক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: রাশিয়া এবং ইরানের মতো দেশগুলোর সমর্থনে বাশার তার শাসন টিকিয়ে রেখেছেন। তবে পশ্চিমা দেশগুলো তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

ব্যক্তিগত জীবন

পরিবার: বাশার আল-আসাদ ২০০০ সালে আসমা আল-আসাদকে বিয়ে করেন। আসমা একজন ব্রিটিশ-সিরিয়ান এবং অর্থনীতিতে দক্ষ। তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে।

ব্যক্তিত্ব: বাশারকে একজন শান্ত, ঠান্ডা মেজাজের ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করা হয়। তার চক্ষু চিকিৎসক হিসেবে প্রশিক্ষণ তাকে একটি নিরপেক্ষ ও বিশ্লেষণী দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছে।

বিরোধ ও সমর্থন

বাশার আল-আসাদকে নিয়ে বিশ্বজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। সিরিয়ার জনগণের একাংশ তাকে সমর্থন করে দেশকে অস্থিতিশীলতার হাত থেকে রক্ষাকারী নেতা হিসেবে। অন্যদিকে, তার কঠোর দমননীতি এবং সামরিক ব্যবস্থাপনার জন্য সমালোচিত।

বাশারের শাসনামল ইতিহাসে গভীর প্রভাব ফেলেছে, যা সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে নতুন রূপ দিয়েছে।

বাশার আল আসাদ কে?

বাশার আল-আসাদ (Bashar al-Assad) সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট। তিনি ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় আছেন। বাশার সিরিয়ার বিখ্যাত আল-আসাদ পরিবারের একজন সদস্য এবং দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল-আসাদের পুত্র।

সংক্ষিপ্ত জীবনী:

জন্ম: ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৬৫, দামাস্কাস, সিরিয়া।

শিক্ষা: বাশার মূলত একজন চক্ষু চিকিৎসক। তিনি দামাস্কাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডাক্তারি পড়ার পর যুক্তরাজ্যের লন্ডনে চক্ষু চিকিৎসায় বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ নেন।

ক্ষমতায় আসা: ২০০০ সালে তার পিতা হাফিজ আল-আসাদের মৃত্যুর পর বাশার সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হন।

শাসনকাল:

তার শাসনামলে সিরিয়া বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের প্রচেষ্টা দেখেছে। তবে ২০১১ সালে শুরু হওয়া "আরব বসন্ত" আন্দোলনের পর সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই গৃহযুদ্ধ বাশারের শাসনের বিরুদ্ধে একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। তার শাসনামলে সিরিয়া আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েছে, বিশেষত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে।

বাশার আল-আসাদ সিরিয়ায় শাসক বাথ পার্টির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং তার শাসনকে রাশিয়া ও ইরানের মতো মিত্র দেশগুলোর সমর্থন রয়েছে।

হায়াত তাহরির আল শামস কে?

হায়াত তাহরির আল শামস (HTS) হলো সিরিয়ার একটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী, যা মূলত ইসলামপন্থি এবং জিহাদপন্থি সংগঠন হিসেবে পরিচিত। এটি সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ চলাকালে গঠিত হয়েছিল এবং বর্তমানে ইদলিব প্রদেশসহ কিছু এলাকায় সক্রিয়।

মূল তথ্য

গঠিত:

হায়াত তাহরির আল শামস ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত হয়। এর মধ্যে আল-কায়েদার সিরিয়ান শাখা হিসেবে পরিচিত জাবাত আল-নুসরা (Jabhat al-Nusra) সবচেয়ে প্রভাবশালী ছিল।

নামার্থ:

"হায়াত তাহরির আল শামস" এর অর্থ "লেভান্ট মুক্তির ফ্রন্ট"। এটি সিরিয়ায় একটি ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে।

গোষ্ঠীর প্রধান:

গোষ্ঠীর নেতৃত্বে রয়েছেন আবু মুহাম্মদ আল-জুলানি, যিনি আগে জাবাত আল-নুসরার নেতা ছিলেন।

লক্ষ্য ও আদর্শ:

HTS এর আদর্শ হলো সিরিয়ায় একটি ইসলামি শরিয়া ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। গোষ্ঠীটি নিজেকে আল-কায়েদা থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করলেও, তাদের মতাদর্শ আল-কায়েদার সঙ্গে অনেকাংশে সাদৃশ্যপূর্ণ।

অঞ্চল:

HTS বর্তমানে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, বিশেষ করে ইদলিব প্রদেশে কার্যকর। এটি সেখানে কার্যত প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে ভূমিকা

HTS সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারা আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়।

তবে তাদের চরমপন্থি নীতি এবং সহিংস কার্যক্রমের কারণে তারা অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও স্থানীয় জনগণের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

নিষিদ্ধকরণ:

হায়াত তাহরির আল শামসকে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, তুরস্কসহ বেশ কয়েকটি দেশ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।

সমালোচনা:

তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন, চরমপন্থি মতাদর্শ এবং সিরিয়ার সাধারণ জনগণের ওপর কঠোর শাসনের জন্য ব্যাপক সমালোচিত।

বর্তমান পরিস্থিতি

বর্তমানে HTS সিরিয়ার ইদলিব অঞ্চলে শক্তিশালী। তারা সেখানে একটি ছায়া প্রশাসন পরিচালনা করছে। তবে আসাদ সরকারের বাহিনী, রাশিয়া এবং অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীর চাপের মুখে তাদের অবস্থান সবসময় হুমকির মুখে থাকে।

HTS সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে একটি অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং বিতর্কিত পক্ষ, যা দেশটির ভবিষ্যতের জন্য গভীর প্রভাব ফেলেছে।

Post a Comment