প্রাকৃতিক উপায়ে যোনি পিচ্ছিল করা:
- যৌন সঙ্গমের আগে পর্যাপ্ত ফোরপ্লে করুন। এটি যোনিপথে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে পিচ্ছিলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- শরীর হাইড্রেটেড রাখা যোনি পিচ্ছিলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
- স্বাস্থ্যকর ফ্যাট (যেমন অ্যাভোকাডো, বাদাম, অলিভ অয়েল) এবং ফলমূল গ্রহণ করুন।
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার (যেমন মাছ, চিয়া সিড) পিচ্ছিলতা বাড়াতে সহায়ক।
- যোনি অঞ্চলে প্রাকৃতিক লুব্রিক্যান্ট হিসেবে অ্যলোভেরা জেল বা কোল্ড-প্রেসড নারকেল তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।
- সিলিকন বা জল-ভিত্তিক লুব্রিক্যান্ট (যেমন KY Jelly) ব্যবহার করুন।
- তেল-ভিত্তিক লুব্রিক্যান্ট ব্যবহার করলে কনডমের কার্যকারিতা কমতে পারে, তাই সাবধান থাকুন।
- যদি মেনোপজ বা হরমোনের কারণে শুষ্কতা হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে ইস্ট্রোজেন ক্রিম বা হরমোন থেরাপি ব্যবহার করা যেতে পারে।
- কোনো রাসায়নিকযুক্ত সাবান, পারফিউম বা হার্শ পণ্য ব্যবহার এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি যোনি শুষ্কতা বাড়াতে পারে।
- যদি যোনি শুষ্কতার কারণে ব্যথা বা অস্বস্তি হয়।
- যৌনমিলনের সময় বা পরে রক্তপাত হয়।
- কোনো প্রাকৃতিক বা ওষুধের পদ্ধতিতে পিচ্ছিলতা না বাড়ে।
- যোনি পিচ্ছিলতা একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, এবং যদি এটি কমে যায় তবে এটি চিকিৎসা বা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।
যোনি লুজ হয় কেন
- প্রাকৃতিক প্রসব (নরমাল ডেলিভারি) যোনির পেশিগুলো প্রসারিত করে, কারণ শিশুর মাথা এবং শরীর যোনিপথ দিয়ে বাইরে আসে।
- ডেলিভারির পরে যোনিপথ কিছুটা শিথিল মনে হতে পারে, তবে সময়ের সাথে সাথে পেশিগুলো আংশিকভাবে পুনরুদ্ধার হয়।
- বয়স বাড়ার সাথে সাথে এবং মেনোপজে পৌঁছানোর পরে, শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমে যায়, যা যোনির টিস্যু এবং পেশিগুলোর স্থিতিস্থাপকতা কমাতে পারে।
- একাধিক সন্তান জন্ম দেওয়ার ফলে যোনির পেশিগুলো আগের তুলনায় বেশি শিথিল হতে পারে।
- পেলভিক ফ্লোর পেশি দুর্বল হলে যোনি শিথিল বোধ হতে পারে। ওজন বেশি হওয়া এই দুর্বলতা বাড়াতে পারে।
- পেলভিক অর্গান প্রোলাপস (Pelvic Organ Prolapse) বা পেলভিক ফ্লোরের অন্যান্য সমস্যা যোনি শিথিল বোধ করানোর কারণ হতে পারে।
- এটি পেলভিক ফ্লোরের পেশিগুলো শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন নিয়মিত এই ব্যায়াম করলে যোনির পেশিগুলো টানটান হয়।
- কিভাবে করবেন: প্রস্রাব করার সময় যে পেশি ব্যবহার করে থামানোর চেষ্টা করেন, সেই পেশিগুলো সংকুচিত ও শিথিল করুন। এটি প্রতিদিন ১০-১৫ বার করুন।
- পেলভিক ফ্লোর টোনিংয়ের জন্য যোগব্যায়াম বা অন্যান্য বিশেষ ব্যায়াম কার্যকর।
- অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেললে পেলভিক ফ্লোরে চাপ কমে, যা যোনির পেশিগুলো পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে।
- যদি শিথিলতা খুব বেশি হয় এবং এটি দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে, তবে লেজার থেরাপি বা সার্জারির মাধ্যমে পেশিগুলো মেরামত করা সম্ভব। এ জন্য একজন গাইনিকোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
- যদি যোনি শিথিলতা দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত ঘটায়।
- যদি প্রস্রাব ধরে রাখতে সমস্যা হয়।
- যদি যোনি বা পেলভিক অঞ্চলে অস্বাভাবিক চাপ বা ভারী অনুভূতি থাকে।
যোনি টাইট করার ঘরোয়া উপায়
- কেগেল ব্যায়াম যোনির পেশি শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট এই ব্যায়াম করলে ফল পেতে পারেন।
- কিভাবে করবেন: প্রস্রাবের সময় যে পেশি ব্যবহার করে ধরা হয়, সেই পেশি সংকুচিত এবং প্রসারিত করুন।
- অ্যালোভেরা জেল যোনির ত্বকে টান আনতে পারে।
- প্রাকৃতিক অ্যালোভেরা জেল নিয়ে যোনির বাইরের অংশে হালকা মালিশ করুন।
- এটি দৈনিক ৫-১০ মিনিট করতে পারেন।
- গোলাপজল ও মধুর মিশ্রণ যোনির পেশিকে দৃঢ় করতে সাহায্য করতে পারে।
- এক টেবিল চামচ গোলাপজল এবং এক চা চামচ মধু মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
- ডিমের সাদা অংশ যোনির টিস্যুকে টানটান করতে সহায়ক।
- একটুখানি ডিমের সাদা অংশ নিয়ে যোনির বাইরের অংশে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন, তারপর ধুয়ে ফেলুন।
- দারুচিনির গুঁড়ো ও মধুর মিশ্রণ যোনির টান ফিরিয়ে আনতে পারে।
- সামান্য দারুচিনির গুঁড়ো মধুর সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
- প্রাকৃতিক তেল যোনির পেশি মসৃণ ও দৃঢ় রাখতে সাহায্য করে।
- নিয়মিত হালকা তেল দিয়ে মালিশ করতে পারেন।
- যোনির শিথিলতার জন্য মানসিক চাপ ও হরমোন পরিবর্তন দায়ী হতে পারে।
- দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা থাকলে বা ত্বকের কোনো প্রতিক্রিয়া হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- যোনির স্বাস্থ্য রক্ষায় সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
কী কী কারনে ভ্যাজাইনা লুজ হয়?
ভ্যাজাইনা (যোনি)
সাধারণত খুবই
ইলাস্টিক বা
স্থিতিস্থাপক, এবং
এটি
বিভিন্ন কারণে
সাময়িকভাবে প্রসারিত হতে
পারে।
তবে,
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি
স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে
আসে।
কিছু
কারণের
জন্য
ভ্যাজাইনা একটু
বেশি
ঢিলা
বা
প্রসারিত মনে
হতে
পারে।
এর
মধ্যে
প্রধান
কারণগুলো হলো:
১. প্রসব (Childbirth):
স্বাভাবিক ডেলিভারির সময়
ভ্যাজাইনা প্রসারিত হয়
যাতে
শিশুর
জন্ম
নিতে
পারে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, প্রসবের পর
ভ্যাজাইনা অনেকটাই আগের
অবস্থায় ফিরে
আসে,
তবে
একাধিক
সন্তান
জন্ম
দিলে
এটি
কিছুটা
ঢিলা
অনুভূত
হতে
পারে।
২. বয়স (Aging):
বয়স
বাড়ার
সাথে
সাথে
শরীরে
ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমাণ
কমে
যায়,
যার
ফলে
ভ্যাজাইনাল টিস্যু
কিছুটা
পাতলা
ও
কম
ইলাস্টিক হতে
পারে।
মেনোপজের পর
এই
পরিবর্তন আরও
স্পষ্ট
হয়।
৩. হরমোন পরিবর্তন (Hormonal Changes):
গর্ভাবস্থা, মেনোপজ
বা
অন্যান্য হরমোনজনিত পরিবর্তনের ফলে
ভ্যাজাইনার স্থিতিস্থাপকতা কমে
যেতে
পারে।
৪. ওবেসিটি (Obesity):
অতিরিক্ত ওজন
শরীরের
পেশী
ও
টিস্যুর উপর
প্রভাব
ফেলতে
পারে,
যা
পেলভিক
মাংসপেশী দুর্বল
করতে
পারে।
এটি
ভ্যাজাইনা ঢিলা
হওয়ার
কারণ
হতে
পারে।
৫. ধূমপান (Smoking):
ধূমপান
কোলাজেন উৎপাদন
হ্রাস
করে,
যা
ত্বক
ও
টিস্যুর ইলাস্টিসিটি কমিয়ে
দেয়।
এটি
ভ্যাজাইনাল টিস্যুর উপরও
প্রভাব
ফেলে।
৬. পেলভিক ফ্লোর দুর্বলতা (Pelvic Floor Weakness):
যদি
পেলভিক
ফ্লোর
মাংসপেশী দুর্বল
হয়ে
যায়,
তাহলে
ভ্যাজাইনা ঢিলা
অনুভূত
হতে
পারে।
প্রতিরোধ ও সমাধান:
- কেগেল
ব্যায়াম (Kegel Exercises):
এটি পেলভিক ফ্লোরের পেশী শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং ভ্যাজাইনা টাইট করতে সাহায্য করতে পারে।
- পেলভিক
ফ্লোর ফিজিওথেরাপি: বিশেষজ্ঞের
কাছ থেকে ফিজিওথেরাপি নিলে সুফল পাওয়া যায়।
- স্বাস্থ্যকর
জীবনযাপন: সঠিক খাদ্যাভ্যাস
ও
নিয়মিত ব্যায়াম পেলভিক ফ্লোর শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে।
আপনি যদি এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হন, তাহলে একজন গাইনোকোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করা ভালো।