রমজান: পবিত্রতা, সংযম ও ইবাদতের মাস
রমজান ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র মাস, যা মুসলমানদের জন্য আত্মশুদ্ধি, সংযম ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগ এনে দেয়। এই মাসে বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা পালন করেন, যা কেবলমাত্র উপবাস নয় বরং আত্মনিয়ন্ত্রণ, ধৈর্য ও সহমর্মিতার অনুশীলন।
রমজান মাসের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো কুরআন অবতরণের মাস হওয়া। এই মাসেই লাইলাতুল কদর বা ‘শবে কদর’ রয়েছে, যা হাজার রাতের চেয়েও উত্তম বলে কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। তাই এই মাসে মুসলমানরা বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত, ইবাদত-বন্দেগি ও নফল নামাজ আদায়ে মনোনিবেশ করেন।
রোজা পালনের মূল উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া অর্জন, অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি ভয় ও আনুগত্য বৃদ্ধি করা। সারাদিন উপবাস থেকে মানুষ ক্ষুধার কষ্ট অনুভব করে, যা গরিব-দুঃখীদের প্রতি সহানুভূতি বাড়িয়ে তোলে। ফলে দান-সদকা, জাকাত ও ফিতরা প্রদান এই মাসে বিশেষ গুরুত্ব পায়।
রমজান শুধু আত্মিক সাধনার মাসই নয়, এটি শরীর ও মনের জন্যও কল্যাণকর। রোজা আমাদের পরিপাকতন্ত্রকে বিশ্রাম দেয় এবং শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে। তাছাড়া আত্মসংযম ও আত্মনিয়ন্ত্রণের চর্চা একজন ব্যক্তিকে মানসিকভাবে দৃঢ় করে তোলে।
রমজানের শেষে আসে ঈদুল ফিতর, যা আনন্দ ও কৃতজ্ঞতার উৎসব। এক মাস সংযম পালনের পর আল্লাহর কৃপায় মুসলমানরা ঈদের মাধ্যমে উল্লাস ও উদযাপনে মেতে ওঠে।
অতএব, রমজান শুধু রোজা রাখার মাস নয়, এটি আত্মশুদ্ধি, সংযম, দানশীলতা ও আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের এক অপূর্ব সুযোগ।