বৃষ্টি নিয়ে কবিতা।বৃষ্টি নিয়ে রোমান্টিক কবিতা।বৃষ্টি নিয়ে বিখ্যাত কবিতা

প্রেমের বিজ্ঞাপন

শহর জুড়ে বৃষ্টি নামুক
তোমার চোখে বৃষ্টি থামুক
ভিজুক চোখের কাজল,
দুষ্টু বাতাস উড়িয়ে নিক
বৃষ্টি ভেজা আঁচল।

জলতরঙ্গে সিক্ত অঙ্গে 
শাড়ি লেপ্টে যাক,
শাড়ির ফাঁকে উকিঁ মারুক
পাতলা কোমর বাঁক।

আকাশ ফুড়ে বৃষ্টি নামুক
থামুক তোমার গায়ে,
জলতরঙ্গে হেঁটো যেও মেয়ে
বৃষ্টি নূপুর পায়ে।

বৃষ্টির ছন্দে অনাবিল আনন্দে
মনে জাগুক কাঁপন
তন্বী দেহে বৃষ্টি আঁকুক
প্রেমের বিজ্ঞাপন।

না বলে আসা হঠাৎ বৃষ্টি

না বলে আসা হঠাৎ বৃষ্টি
সঙ্গে নেইতো ছাতা
হতচ্ছাড়া বৃষ্টিতে হায়
ভিজেই গেলো মাথা

এমন কাকভেজা হয়েও
কেন লজ্জা কর মিছে
দ্বিধা ভেঙ্গে এসো মেয়ে
আমার ছাতার নিচে

পাছে যদি কিছু বলে
বলতে থাকুক লোক
একই ছাতায় নিচে আজ
প্রেমের গল্প হোক

গল্পে গল্পে কাটুক তবে
বৃষ্টি ভেজা প্রহর
প্রেমে প্রেমে হৃদয় ভাসুক
জলে ভাসুক শহর//

মেঘ আসে বৃষ্টি ঝরাতে 
 জান্নাতুল মাওয়া রুমানা 

মেঘ হয়ে এলে তুমি,
বৃষ্টি হয় ঝরে যাবে।
পাহাড় সমান দুঃখ বুকে নিয়ে!
কান্না আমার সাথী হবে?
চলে যাবে তুমি, 
ভুলে যাবে আমায়।
আমার সব কল্পনায়, 
গেঁথে রবে স্মৃতিতে।
ভেবো না তুমি,
বলবো না কাউকে আমি,
শুধু সারাজীবন তুমিই মনে থাকবে।
রেখে দিলাম তোমায়,
স্মৃতি ভরা পাতায়।
মনে পড়লে তোমায়, 
হারিয়ে যাই কল্পনায়।

হে বৃষ্টি
      শাহ্‌জাহান আলী ভূইয়া


অশান্ত মরুময় তৃষিত দুটি হৃদয়
খোলা আকাশ -
অন্ধকারে মিটিমিটি তারার মেলা
টিপ টিপ পায়ে টিএস সি পেরিয়ে
বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে এগিয়ে চলছি। 
রাস্তা পেরুনোর ছলে -
আলতো করে হাত চেপে ধরা
যা চেয়েছিলে অগোচরে নিজেই।
ঝির ঝির বৃষ্টি মাথায় নিয়ে হাঁটছি। 
হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকালো -
মেঘের তিব্রতা বেড়ে গেলো
পালাবো না আজ -
বারিবর্ষনের শান্তিময়তায় বিলিন হবো দুজন!!!
এ কি হা হা কার জড়ানো সুখ
মুক্তি চাই - চাই সুখ
সুখের তীব্র ব্যাথা বয়ে চলছি - সয়ে চলছি
যন্ত্রনা মানেও সুখ
তপ্তদেহে শীতলতার শিহরন চাই
প্রবল সুখানুভুতি - 
সবুজ তরুর মতো লতিয়ে দুজন!!
আকাশ পানে তাকিয়ে চিৎকারে  সুধাই
হে বৃষ্টি তুই -
আমাদের শ্বাশত ভালবাসাকে বরন করে নে
দেহে বহিয়ে দে অমিয় সুধা
খুব কাছে, হৃদয় যে খানে রয়
বাহুর পেষনে দোলখাবো দুজন
সব কলংক সাফ ধুয়ে দিয়ে যাবে। 
পবিত্র ভালবাসার সাক্ষি তুই হে বৃষ্টি,
কতদূর আমার সুখ পাখির মিলনালয়
বৃষ্টিস্নাত আকশই বলতে পারবে
মুক্তিটা না হয় সেই দিবে।


আয় বৃষ্টি 
জয়া গোস্বামী


ঝুম ঝুম করে  বৃষ্টি পড়ুক আকাশ হতে নেমে,
বলবো না ও বৃষ্টি যাস না তুই কখনও থেমে।
শহর হয়েছে উত্তপ্ত বাতাসের নেই দেখা,
আয় না বৃষ্টি রাতে কথাটা দিচ্ছিস কি পাকা? 
ঝিরঝির করে ঝরবে বৃষ্টি আজ সারা রাত, 
শীতল স্পর্শে মন চুরি হবে বৃষ্টি করবে বাজিমাত। 
টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ পড়ুক টুপটাপ অবিরাম, 
পাড়ার দস্যি ছেলেরা  বৃষ্টিতে ভিজে কুড়াবে আম।
আকাশ ধূসর মেঘে  হঠাৎ করে যাক ঢেকে,
ইচ্ছা করে মনের ভিতর  আজন্ম দিই  রেখে।
খাতার পাতার বৃষ্টির ছাপ থাক না একটু লেগে,
কদমকলি বৃষ্টির জন্য কত রাত আছে জেগে।
স্তব্ধ হয়ে বসে পাখিরা আজও গায়নি দুকলি,
বৃষ্টির পায়নি দেখা ;আসেনি গন্ধরাজে অলি।
রুক্ষ প্রকৃতি মলিন হয়েছে গাছেদের সাজ,
বৃষ্টির স্নান করবে এসো পাবে না কবি লাজ ।
বৃষ্টি এসে করো তোমার শীতল স্পর্শ ঠোঁটে, 
হারুচাচার নৌকাটা  দুলে উঠুক না ঘাটে।
অনুরোধ করলাম বৃষ্টিতে  ভিজবো রাতে একলা,
বৃষ্টি এসে দিয়ে যাক কবিতার পাতায় দোলা।
মৃদু বাতাসের  গন্ধ নিয়ে লিখবো ছন্দের বৃষ্টির কবিতা,
বৃষ্টির জলে শব্দ শুনি  বাইরে ভিজুক গাছের পাতা।
কলমের মেজাজ ফুরফুরে শব্দে ভরিয়ে তুলেছি খাতা,
বৃষ্টি পড়ুক ইচ্ছে মতো সঙ্গে থাক সকলের সখের ছাতা।


আয় বৃষ্টি 
পাপিয়া সরকার 

আয় আয় বৃষ্টি নেমে 
আকাশের বুক থেকে
তোকে নিয়ে প্রাণ জুড়াবো 
মোদের মনটি ভরে।
তুই না এলে ধরার মাঝে
চলবো কেমন করে 
তোকে ছাড়া নিত্য দিনের 
কাজ পড়ে থাকে।
আয় বৃষ্টি আয় ঝেপে 
খাবার দিব মেপে 
পূর্ণি দেবো উজাড় করে 
পারবি যত নিতে।
তোকে ছাড়া  উদাস মনে 
কেটে যাচ্ছে দিনের বেলা 
তোকে ছাড়া হয় কি বল
ফসল ফলিয়ে গোলায় ভরা।
জীবন যাপনের সকল কাজে
তোকেই লাগে সাথে
তুই ছাড়া অচল সবই
এই ধরার মাঝে।
আকাশ ভেঙে আয় ছুটে 
থাকিস না আর দূরে
তোকে ছাড়া মানুব জীবন 
পড়েছে যে বিপাকে।
খোদা তুমি রহম করো 
তুমি দয়ার সাগর
তোমার দয়ায় বেঁচে যাবে 
সকল জীবের জীবন।


বৃষ্টি হোক
 মোঃ আব্দুল মুহিত


বৃষ্টি হোক!
মুষলধারে চারপাশ অন্ধকার করে বৃষ্টি হোক,
কিংবা ছাগল তাড়ানো ঝিরঝির বৃষ্টি।
সীমান্ত ঘেঁষা আলপথে আরেকবার দেখা হোক।
আপনি না হয় ভেড়ার পাল সামলে হাঁপিয়ে গিয়ে
বাড়ির আঙিনায় ধপাস করে বসে খানিক বিশ্রাম নিন।
ঘোমটা করা ওড়না সরিয়ে, গগণবেয়ে নামা জলে
তৃপ্তির মুখস্নান করুন, আবার দেখার তকদির হোক।
অতঃপর, কোনো এক সকালে বছরের প্রথম বৃষ্টির ফোঁটা ঝরলে
ঠিক ঐ সময়টাতে আপনাকে দেখা, আর স্বপ্ন নয়।
সেদিন বৃষ্টির গানে তাল মিলিয়ে পাল্লা দিয়ে প্রেম হবে।
আমৃত্যু বিস্তৃত তৃষ্ণা নিয়ে আপনার দর্শন হবে আমার হক্ব।
আপনি হয়তো উপহাস করে বোকা ভেবে প্রাণভরে হাসবেন,
আমি এই কারণটা জেনেও হবো অভিভূত - মুগ্ধ।
আপনার ষোলো আনা সন্তুষ্টি!
বৃষ্টি বিলাসের অব্যক্ত অভিপ্রায় পূরণ করবো,
খোলা আকাশের নিচে চাতকের সাথে আহ্লাদি হয়ে
আপনি বিধ্বংসী শিল কুড়াবেন, আমি জমিয়ে রাখবো!
ভালোবাসবো না হয় সঙ্গোপনে, সাক্ষী কেবল উঁচু দিগন্ত।
সেদিন না হয় চেঁচিয়ে বলবেন, আরেক পশলা বৃষ্টি হোক!


 ঝড় বৃষ্টি হার মানবে
নূপুর আঢ্য


ঝড় উঠেছে প্রবল বেগে
অশনি খেলা করে,
সারা আকাশ সহসা যেন
আঁধারে গেছে ভরে।
সূর্য আছে মুখ ফিরিয়ে
প্রাণের ছোঁয়া নেই,
এ মন তবু হার মানে না
কোনও বাধাতেই।
ইচ্ছেনদী থেমে থাকে না
বয়ে আপন বেগে,
প্রতিকুলতা সরিয়ে দিয়ে
তবুও উঠে জেগে।
সাজিয়ে তোলে চলার পথ
প্রেমের ছোঁয়া দিয়ে,
এগিয়ে যায় লক্ষ্যপথে
বড় যত্ন নিয়ে।
ঝড় বৃষ্টি হার মানবে
সূর্য দেখা দেবে,
ফুটবে ফুল হৃদয় বাগে
আপন করে নেবে।


বৃষ্টি-বাদল 
 গোপেশ রায়  


বৃষ্টি এলে তোমায় দেব শুতে দোলবারান্দায়
দেখবে তুমি যাচ্ছে চাষি লাঙল কাঁধে জলায় ।
রোদ উঠেনি সারা সকাল
বৃষ্টি মাথায় এলো বিকাল
ছোল কিতকিত করছে জল মাতছে শিশু খেলায় 
আজ নয় কাল ফুটবে যে ফুল যাবো কদমতলায় । 
মনটা ময়ূর নাচছে কেমন বৃষ্টি মাথায় নিয়ে 
সারাটাদিন যেমন তেমন রাতে হবে খেঁকশিয়ালির বিয়ে
মজার কথা বলছি শোন
আজগুবি নয় সত্য জেনো 
এসব নিয়ে বেঁচে থাকার মানে তৈল সিঁদুর দিয়ে
নরম গরম ধরম করম ঝগড়া মায়ে ঝিয়ে । 
বর্ষা বাদল বাজায় মাদোল শাল পিয়ালের বনে
কেমন করে আসবেরে বর কাঁদছে বিয়ের কনে ।
একটা কথা শোন
রেখো মনে গোপন
সাধ করে আর বলছিনা সত্য মিথ্যা রণে
কলকাতাতে মিষ্টি হাঁড়ি লোভ লালসার সনে ।


আষাঢ়ে এল বৃষ্টি 
সঞ্চয়িতা মুখার্জি 


এসেছে আষাঢ় মাস,
  মাসের প্রথমেই --
সঙ্গে করে নিয়ে আসতে 
চেয়েছিল বৃষ্টিকে।
কিন্তু সে যে বড় একগুঁয়ে,
কিছুতেই তখন এল না।
মেঘের ওপর হয়েছিল তার 
বড় অভিমান ---
অনেক বোঝানোর পর
তার রাগ কমল,
তারপর সে এল।
এসেও কিছুতেই থাকতে চাইছিল না।
অবশেষে সে থেকে গেল,
কবিরও খুব আনন্দ হোলো।
বৃষ্টি এলেই তো 
কবির মন হারিয়ে যায় 
কোন্ অজানা পথে
বসে আনন্দ রথে।


বৃষ্টি ভেজা রাত
রিফা সানজিদা রিমু 


মুষলধারে বৃষ্টি হবে 
আমি মনের ভুলে বাহিরে যাবো 
একাকীত্ব মেঘের ভেলায় দুঃখ লুকাবো 
মনে মনে ভাববো, যদি কেউ থাকতো! 
রিনিঝিনি সুর মনের জানালা ছেঁয়ে যাবে
পুরোনো আবেগ কথা কবে....!
আমি স্তব্ধতা নিয়ে দাঁড়িয়ে যাবো
নিজের কাছে খুব করে জানতে চাইবো
কেন সবার মতো তুই হাসছিস না?
বৃষ্টি সেদিন থামবে না
ভেজা শরীরে ঠান্ডা লাগবার ভয় মনে থাকবে না।
সেদিনের সেই ফোঁটা ফোঁটা পানি
আর দীর্ঘশ্বাস ফেলবে না।
বাদলের কদমগুলো আর কখনো ঝরে যাবে না
যখন বিদুৎ চমকাবে, 
একটুকুও ভয় করবো না
কাওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে রাখবো না
শুধু জানবো, আমি একা 
শুধুই একা।
একাকীত্বের বেদনা বাদলে হারাবো
তবে,নিজেকে আর হারাবো না!
আমি খুব করে চাই 
বৃষ্টি ভেজা রাত।।।।।

 এক পশলা বৃষ্টি
সৌমিত্র দাস


বট গাছের পাতায় জমা বৃষ্টি
ঝরে পড়ছে এলোমেলো বিক্ষিপ্তভাবে
পিচ রাস্তার উপরে, যেখানে জমা রয়েছে
রাতের মুষলধারার বৃষ্টি। চাদরে জড়ানো
এক বৃদ্ধা হেঁটে যায়, হাতে তার একটি লাঠি
টলোমলো পায়ে খাদ্যের অন্বেষণে দোকানের দিকে
রয়েছে তাকায়ে। একটি কুকুর শুকনো শরীর নিয়ে
লেজ নাড়ছে। একইভাবে করছে এক মুঠোর অপেক্ষা।
টায়ারের শব্দ ভেসে আসে, তীব্র গতিতে এগিয়ে যায়
একটি গাড়ি, আকাশ তখনও মেঘলা।
বট গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে বিবর্ণ আকাশ
উঁকি মারে আর অপেক্ষা করে অভুক্তের
জঠর জ্বালা নিবৃত্তির, ক্ষণিক বিরতির পর
পুনরায় বর্ষণধারায় সিক্ত করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ঠকঠক করে বুড়ি মহানন্দে ফিরে যায়, আনন্দে
আটখানা কুকুরটি শুকনো খরের নিরাপদ আশ্রয়ে
ঢুলুঢুলু চোখে পুনরায় নিদ্রায় মগ্ন।
দু এক ফোটা বৃষ্টি বটগাছের পাতায়। করলো স্পর্শ
আবার আবার নামবে এক পশলা বৃষ্টি।

Post a Comment