হোলি নিয়ে কবিতা।হোলি নিয়ে প্রেমের কবিতা।দোলের কবিতা

হোলি ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় হিন্দু উৎসব, যা রঙের উৎসব হিসেবে পরিচিত। এটি বসন্ত ঋতুর আগমনের আনন্দে ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমায় উদযাপিত হয়।

প্রধানত দুই দিন ধরে চলে—প্রথম দিন "হোলিকা দহন," যেখানে আগুন জ্বালিয়ে পৌরাণিক কাহিনির প্রতীকী উপস্থাপন করা হয়, এবং দ্বিতীয় দিন "রংওয়ালি হোলি," যেখানে মানুষ একে অপরকে রঙ মেখে আনন্দ প্রকাশ করে। এই উৎসব ভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা ও মনের কলুষতা দূর করার বার্তা দেয়। হোলিতে বিশেষ মিষ্টি ও পানীয় যেমন "ঠান্ডাই" ও "গুজিয়া" খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। এটি ভারত ছাড়াও নেপালসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হয়।

হোলি নিয়ে সেরা কবিতা

খেলবো হোলি
মৃণাল কান্তি পাল

এলো হোলি

চল খেলি

খেলবো হোলি

সকলে মিলি।

আয়রে চলে

খেলবো বলে 

মাখবো আবির

তোমার শরীর।

রাঙ্গিয়ে  মুখ

করবো সুখ

ঘুরবো মোরা

সম্পূর্ণ পাড়া।

রঙ্গের পিচকিরিতে 

মারবো পাঞ্জাবিতে

খেলার শেষে

মিলে মিশে।

মিষ্টি মুখে

হাসবো সুখে

জড়িয়ে ধরে

আপন করে।

ছুঁয়ে চরণ

বড়দের আপন

আর্শীবাদ চাই

চরণে তাই।


রঙের খেলা
বিশ্বনাথ অধিকারী


আজ খেলবো হোলি আবির-রঙে,

আয়রে নেমে আয়,

লাগুক সে রঙ ধূলায় পথে

মনের গহন আঙিনাতে

আজ মিশবো সবার রঙের সাথে,

যার সাথে মন চায় ।

রঙ দিয়ে যাও মনের কোনে,

করবো প্রবেশ সেথায়,

ভাঙতে ভাঙতে হবো ধূলি

ভারগুলোকে করবো খালি

কটুগন্ধ ভাগিয়ে দেবো, রঙের গন্ধের ছোঁয়ায় |

রাঙাও আমার দৈনতাকে

মুসড়ে পড়া শাখায়,

রঙ ঢালো মোর দেউল তলায়

মাখিয়ে দাও রং শুভ্র জামায়

রঙ দিয়ে দাও নোংরা করে,

যতো আমার সাদায় ।

আমায় নামিয়ে আনো তলায়।

ঐ যে ডাকে কুহুকহু 

ছাতিমগাছের শাখায়,

সে ডাক ছড়িয়ে পড়ে, কৃষ্ণচূড়ায়

শিমূল পলাশ শাখায় শাখায়

ভালোবাসার অমোঘ সে টান,

দুরকে কাছে আনায়।

আমি ভাসবো রঙীন মায়ায় ।



"এসেছে হোলি"
চন্দন দাশ

ঋতুরাজ বসন্তের মধ্যভাগে

 দোল পূর্ণিমা রজনী,

হোলি উৎসবে আবিরে আবিরে মন 

মাতোয়ারা সুষমা ধরণী।

রঙ্গে রঙ্গে সাজে মর্ম গব্বরে 

আনন্দে মনের  বৃন্দাবন,

সুরে সুরে বাজে বীণা হরি নামে 

অবিরাম মুরারী মোহন।

বসন্তের দোলায় নব তরঙ্গে

শিহরণ হৃদয় আঙ্গিনা,

শুদ্ধ চিত্তে শান্তির স্তুতিতে 

পুলকিত অন্তরের নীলিমা।

প্রকৃতি সজ্জিত বৈচিত্র রুপ একটু

নির্মল প্রশান্তি  চাই,

অঙ্গে আবির মাখানো নৃত্যের

তালে মোহন বাঁশি বাজায়।

সেই বাঁশিতে আছে নয় দরজা

দুইটি বন্ধ সাতটি খোলা,

অন্দরে চাবি বাহিরে তালা, দিবানিশি

বাজে, হঠাৎ মারে দোলা।

বাঁশির সুরে পাগল করে  এইতো

জীবন নদীর ভেলা,

ক্ষণস্থায়ী মায়া মোহ একদিন 

সাঙ্গ হবে রঙ্গ রসের খেলা।।


এস খেলি রঙ্গের হোলি
শাহী সবুর 


দোল পূর্ণিমায় মেতেছে সব

রঙ্গের হোলি নিয়ে, 

মনকে সবাই রাঙ্গালো আজ

রঙ্গের ছোয়া দিয়ে। 

হোলি খেলা রঙ্গের মেলা

দারুণ মজা লাগে,

ছোট বড় সবার মনে

রঙ্গিন স্বপন জাগে।

সই সাথীরা করে তারা

রঙ্গের মাখামাখি, 

রঙ্গের হোলি ভুলে ঘরে 

কেমনে বসে থাকি?

মনের দুঃখ ভুলে যেতে

রঙ মাখি আজ মুখে,

রঙ জুয়ারে ভেসে যাবো

হলি খেলার সুখে।


হোলি দোল
              রঞ্জিত ভাওয়াল

        

    গৌড় গৌড় গৌড় বলে 

        গৌড় বলে বল সবাই 

        রাঙা রবির প্রভাত হলে 

       গৌড় ধামে আয় সবাই

       মাতবো আজ হোলি রঙে 

      রাঙিয়ে দেবো হরির পায়ে

          ফুল বসন্তের উৎসবে 

         আয় সবাই আয় সবাই

         হরি আজ সাজবে রঙে 

        রাঙিয়ে দেবো চরণ দ্বয়ে

             হরি যে জগৎ হরি 

         মাতি আজ রঙ খেলায়



খেলবো হোলি
কবি ফটিক ঘোষ


প্রকৃতি আজ ধরেছে সাজ

শিমুল পলাশ বনে,

কৃষ্ণচূড়ায় আবির ছড়ায়

সব মানুষের মনে।

কোকিল পাখি বলছে ডাকি

হোলি এলো দেশে,

আয়রে সবাই হৃদয় মাতাই

সেজে রঙ্গিন বেশে।

আয়রে কানাই আয়রে বলাই

পিচকারী' টা নিয়ে,

আবির খেলা কাটবে বেলা

রঙ যে যাবো দিয়ে।

সারা অঙ্গে মাখবো রঙে

খেলবো হোলি সুখে,

সবাই মিলে খুশির দিলে

রঙ মাখিয়ে মুখে।

নদীর জলে স্নানের ছলে

মিলবো সবাই এসে,

হোলির গানে খুশির বানে

যাবো আজি ভেসে।



বাঙালির হোলি 
              শ্রী স্বপন কুমার দাস 

বসন্ত উৎসবের শুভক্ষণে 

দক্ষিণ খুলেছে দ্বার,

সৌহার্দ্যের আঙ্গিকে নানাবর্ণে 

মিলেমিশে একাকার। 

দক্ষিণা মলয় চঞ্চল মনে 

সকল হিয়া ভিতরে,

পলাশ শিমুল অশোক বনে 

খুশিমনে মাথা নাড়ে।

হালকা শীতের আমেজ মনে 

ছোট্ট ছোট্ট খোকাখুকি,

সকাল সকাল দোলের দিনে 

রঙে রঙে মাখামাখি।

ধনী গরীব নবীন প্রবীণ 

মেহনতী সর্বজন,

রঙের খেলায় মত্ত সকল 

উল্লসিত প্রাণমন।

পাড়ায় পাড়ায় দোল উৎসবে 

মেতেছে বঙ্গ বাঙালি,

লাল নীল সবুজ হলুদ রঙে 

খেলছে সবাই হোলি।

রসগোল্লা ভরা মিষ্টির হাঁড়ি 

ঘরে ঘরে অপেক্ষাতে, 

রঙখেলা শেষে ফিরলে বাড়ি 

পড়বে সবার পাতে।

মহামিলন উৎসব ছন্দে 

বসন্ত পূর্ণিমা তিথি,

সর্বধর্ম বর্ণ মিলে আনন্দে 

এটাই বাঙালি রীতি।


ফাল্গুনে হোলি খেলা
কমলেন্দু দে

ফাল্গুনে হোলি খেলা

বসন্ত দোল,

এই নিয়ে মজে থাকে

মনুষ্যকুল।

আবীর গোলাপ দিয়ে

খেলে যায় হোলি,

দ্বাপর যে নয় আজ

যুগ আজ কলি।

ভালোবাসা প্রেম তাতে

হয় বিনিময়,

হৃদয়ের মণিকোঠা

করেছে যে জয়।


ভালোবাসার হোলি
সুজিত শর্মা বিশ্বাস


পুব গগনে সাঁঝের বেলা

উঠলে পূর্ণ শশী,

ফাগের রঙে রাঙবে সবাই

ঘুচবে মনের মসী।

প্রকৃতি আজ রঙ মেখেছে

শিমুল পলাশ লালে,

রঙের খুশি প্রিয়ার মনে

দোল লেগেছে পালে।

ঋতুর রাণী হৃদয়ে তার

বুলায় প্রেমের পরশ,

আবীর নিয়ে খেলবে হোলি

মনে যে তাই হরষ।

সখা যে তার দূরে থাকে

দিয়েছে এক বার্তা,

রঙের নেশায় আসবে কাছে

নাইতো খুশির মাত্রা।

এমন দিনে সবার মনে

সকল বিভেদ ভুলে,

জাগুক নেশা ভালোবাসার

উঠুক ভুবন দুলে।


বেরঙিন-হোলি 
-সৌমেন সরকার 

কালকে হোলি আজকে তোমার 

চলছে লুকোচুরি,

সকাল থেকে পায়নি দেখা 

এখন কি যে করি!

আবির রঙে সাজবে তুমি 

কালকে প্রভাত বেলাই?

ইচ্ছে ছিল সাজিয়ে দেবো 

নিজের হাতে তোমায়!

রাইকিশোরী আমার তুমি  

সাজব আমি শ্যাম,

স্পর্শ রঙের দাও না দিতে 

থাকবে স্মৃতির নাম!

হৃদয় শুধু ভাবছে তোমায় 

চাইছে গোপন মনে,

তোমার কথার শব্দ গুলো 

আজ বাজে কানে!

হৃদয় মাঝে থাকলে আমি 

আসবে তুমি ফিরে,

ভাবনা গুলো তোমার নিয়ে 

আমাই আছে ঘিরে!

ভালোবাস আমাই যদি 

আর রেখো না দূরে,

অল্প কথার গল্প করে 

রঙ মাখাবো ভোরে!

Post a Comment