ফিলিস্তিন নিয়ে বক্তৃতা

প্রিয় পাঠক বাজকে আমরা ফিলিস্তিন নিয়ে সেরা দুৃটি ভাষণ পড়বো।য আপপনাদের ভাষণে সহযোগিতা করবে।

নিচে ফিলিস্তিন নিয়ে একটি হৃদয়স্পর্শী ও তথ্যসমৃদ্ধ বক্তৃতা দেওয়া হলো, যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে উপস্থাপনযোগ্য:

বক্তৃতা: ফিলিস্তিন—একটি নিপীড়িত জাতির ইতিহাস ও মানবতার প্রশ্ন

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম।

সম্মানিত সভাপতি, শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দ, প্রিয় সহপাঠী এবং উপস্থিত শ্রোতামণ্ডলী—আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

আজ আমি এমন একটি বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে কথা বলতে এসেছি, যা কেবল একটি ভূখণ্ডের নাম নয়, বরং এটি একটি দীর্ঘ সংগ্রামের নাম—একটি নিপীড়িত জাতির আত্মত্যাগের ইতিহাস। আমি আজ কথা বলবো ফিলিস্তিন নিয়ে।


ভাই ও বোনেরা,

ফিলিস্তিন মধ্যপ্রাচ্যের এক প্রাচীন অঞ্চল। এটি শুধুমাত্র মুসলমানদের জন্য নয়, বরং ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের কাছেও একটি পবিত্র ভূমি। কিন্তু বিগত শতাব্দীর শুরু থেকেই এই অঞ্চল এক গভীর রাজনৈতিক সংকটের মুখে পড়ে। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের পর থেকে ফিলিস্তিনিদের জীবনে নেমে আসে অমানবিক নির্যাতনের কালো ছায়া।

ফিলিস্তিনিরা হারিয়েছে তাদের ভূমি, ঘরবাড়ি, আত্মীয়-স্বজন। প্রতিনিয়ত বোমা, গুলি, ক্ষুধা ও ভয় তাদের জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাজা উপত্যকা আজ যেন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় খোলা কারাগার, যেখানে মানুষ মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত। শিশুরা স্কুলে যাওয়ার আগেই যুদ্ধের শব্দে বড় হয়ে ওঠে, মাতৃভূমিকে রক্ষার শপথ নেয়।

বন্ধুগণ,

এটি শুধু একটি ভূ-রাজনৈতিক ইস্যু নয়। এটি মানবতার প্রশ্ন। একজন মানুষ হিসেবে আমরা কি পারি না, নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে? নির্যাতনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে? ফিলিস্তিনে প্রতিদিন যে হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে, তা কি আমাদের বিবেককে নাড়া দেয় না?

আমরা যদি সত্যিকারের শান্তি চাই, তবে বিশ্ব সম্প্রদায়কে অবশ্যই ফিলিস্তিন সমস্যার একটি ন্যায়ভিত্তিক ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে। ইসরায়েলকে তার দখলদার নীতির অবসান ঘটাতে হবে। ফিলিস্তিনিদের স্বজাতির অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

প্রিয় শ্রোতাগণ,

আজ আমাদের দায়িত্ব হলো—অন্তত নিজ জায়গা থেকে তাদের জন্য আওয়াজ তোলা, দোয়া করা, তাদের কষ্ট অনুভব করা। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেছেন: “তোমরা পরস্পরের সাহায্য করো ন্যায় এবং তাকওয়ার ভিত্তিতে” (সূরা মায়িদাহ: ২)।

আসুন, আমরা দোয়া করি— “হে আল্লাহ! ফিলিস্তিনের মজলুম ভাইবোনদের হেফাজত করুন। তাদের ধৈর্য ও বিজয় দান করুন।”

শেষ করছি এই কবিতার কয়েকটি চরণ দিয়ে—

"ফিলিস্তিন কাঁদে আজ, রক্তে রঞ্জিত মাটি,
শিশুরা লাশ বুকে জড়িয়ে ধরে রাতি।
জেগে উঠো মানবতা, দাও তাদের পাশে দাঁড়ায়,
ফিলিস্তিন চায় শুধু, বাঁচার একটা সুযোগ।"

ওয়াসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।


২.

নিচে ফিলিস্তিন নিয়ে আরেকটি নতুন বক্তৃতা তুলে ধরা হলো, যা একটু ভিন্ন ধাঁচে লেখা—সমসাময়িক পরিস্থিতি, মানবতা, এবং মুসলিম উম্মাহর দায়িত্বকে কেন্দ্র করে:

বক্তৃতা: ফিলিস্তিন—নির্যাতিতদের কান্না ও আমাদের দায়িত্ব

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

সম্মানিত শিক্ষক, সভাপতি, প্রিয় সহপাঠী এবং শ্রদ্ধেয় শ্রোতামণ্ডলী—

আজ আমি এমন একটি বিষয়ে কথা বলতে চাই, যা আমাদের সবার হৃদয়কে ব্যথিত করে, চোখে জল আনে, এবং আমাদের বিবেককে প্রশ্ন করে—ফিলিস্তিন।

প্রিয় বন্ধুগণ,

প্রতিদিন খবরের কাগজ, টেলিভিশন আর সামাজিক মাধ্যমে আমরা দেখতে পাই—বোমা, ধ্বংসস্তূপ, কাঁদতে থাকা শিশু, রক্তে রঞ্জিত পথ, মৃতদেহের সারি। এটা কোনো সিনেমার দৃশ্য নয়—এটা বাস্তবতা। এটা ফিলিস্তিন। তারা প্রতিদিন বেঁচে থাকে মৃত্যুর ভয়ে, অথচ আমাদের মতো শান্তিপূর্ণ জীবন তাদের জন্য যেন স্বপ্ন।

ফিলিস্তিনের গাজা, হেবরন, জেরুজালেম—এই নামগুলো যেন আজ কষ্টের প্রতিচ্ছবি। যেখানে মুসলিম, খ্রিস্টান, ইহুদি—সবার মিলেমিশে থাকার কথা ছিল, সেখানে একদল দখলদার গোষ্ঠী বছরের পর বছর ধরে হত্যা, নির্যাতন, গৃহহীনতা আর দখলের রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে।

শ্রোতামণ্ডলী,

একবার ভাবুন তো, যদি আমাদের ভাইবোনেরা, বাবা-মা, সন্তানদের এমন নির্যাতনের শিকার হতো—তবে আমরা কী করতাম? ফিলিস্তিনিরা আজ মানবতার কাছে প্রশ্ন রাখছে, মুসলিম উম্মাহর কাছে প্রশ্ন রাখছে—তোমরা কোথায়?

আজ আমাদের দায়িত্ব—

  • সচেতন হওয়া,
  • অন্যদের সচেতন করা,
  • তাদের জন্য দোয়া করা,
  • সহায়তার উপায় খোঁজা।

আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ফিলিস্তিনের ইতিহাস জানানো, যাতে কেউ ইতিহাস বিকৃত করতে না পারে।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন—

"অবিচারকারীদের সম্পর্কে আল্লাহ্‌ নির্লিপ্ত নন, তিনি তাদের শুধু এক দিনের জন্য বিলম্ব দেন..."

— (সূরা ইব্রাহিম: ৪২)

বন্ধুগণ,

একদিন আসবে, ইনশাআল্লাহ, যখন ফিলিস্তিন আবার স্বাধীন হবে। মসজিদুল আকসা আবার মুক্ত হবে। শিশুরা আর রক্ত নয়, খেলনা হাতে হাসবে। সেই দিনের আশায়, আমরা আজ দোয়া করি, কাজ করি, এবং পাশে দাঁড়াই।

আসুন, সবাই মিলে বলি—

"আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষে, আমরা মানবতার পক্ষে।"

ওয়াসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

Post a Comment