বীর্য খাওয়ার উপকারিতা
বৈজ্ঞানিকভাবে বীর্য খাওয়ার স্বাস্থ্যগত কোনো উল্লেখযোগ্য উপকারিতার প্রমাণ নেই। অনলাইনে বা কথাবার্তায় অনেক দাবি শোনা গেলেও, এগুলোর বেশিরভাগই ভুল ধারণা বা ভুল তথ্যের ভিত্তিতে ছড়ানো।
বীর্য মূলত প্রোটিন, মিনারেল, এবং কিছু এনজাইম দিয়ে গঠিত হলেও, এটি খাবার বা পানীয়ের বিকল্প কোনো পুষ্টিকর উপাদান নয়। তবে, ক্লিনিক্যালি যদি জিজ্ঞেস করেন —
স্বাভাবিকভাবে স্বাস্থ্যবান ব্যক্তির বীর্যে (যদি কোনো যৌন সংক্রামক রোগ না থাকে) ক্ষতিকর কিছু থাকে না, তবে এর অর্থ এই নয় যে এটি খাওয়া উপকারী বা পুষ্টিকর।
কিছু ভুল ধারণা:
- ভুল: অনেকে বলে থাকেন এতে উচ্চ প্রোটিন বা ভিটামিন থাকে — সত্যি বলতে, এতে খুব সামান্য পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকে, যা শরীরের জন্য উপকার করার মতো পর্যাপ্ত নয়।
- ভুল: ত্বক ভালো হয় বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে — বৈজ্ঞানিকভাবে এটার পক্ষে কোনো সঠিক প্রমাণ নেই।
সতর্কতা:
- যদি কোনো যৌন রোগ থাকে (যেমন এইচআইভি, এইচপিভি, হেপাটাইটিস, ক্ল্যামিডিয়া ইত্যাদি), তাহলে এটি খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
- হাইজিনের বিষয়েও খেয়াল রাখতে হয়, কারণ এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ নির্গত তরল।
সারসংক্ষেপ:
- বীর্য খাওয়ার পুষ্টিগুণ বা স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে বিশ্বাসযোগ্য বা পর্যাপ্ত তথ্য নেই।
- বরং, ঝুঁকি আছে যদি স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করা হয় বা যৌন সংক্রমণের বিষয় নিশ্চিত না হয়।
কত দিন পর পর বীর্য ফেলা উচিত
প্রথম কথা:
বীর্যপাতের (Ejaculation) নির্দিষ্ট কোনো বাধ্যতামূলক সময়সীমা নেই।
এটা একেবারেই ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক ও জীবনযাপনের ধরন অনুযায়ী ভিন্ন হয়। তবে, গবেষণা ও চিকিৎসকরা কিছু দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন, যা আপনাকে বুঝতে সাহায্য করবে।
বিজ্ঞান কী বলে:
১. গবেষণা অনুযায়ী:
একটি গবেষণা (JAMA, ২০১৬) অনুযায়ী, প্রতি মাসে প্রায় ২১ বার বীর্যপাত করলে পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কিছুটা কমতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে এটা নিশ্চিত চিকিৎসা নয়, শুধু একটি পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণা।
২. স্বাভাবিক দিক:
আপনি যদি সুস্থ থাকেন, তাহলে সপ্তাহে ২-৪ বার বীর্যপাত একদম স্বাভাবিক ধরা হয়। তবে এটা বাধ্যতামূলক কোনো নিয়ম নয়।
কেউ কেউ প্রতিদিনও করতে পারেন, তাতে সমস্যা নেই — যদি শারীরিক বা মানসিক ক্লান্তি না থাকে।
৩. দীর্ঘদিন না হলে:
অনেকদিন বীর্যপাত না হলে সাধারণত শরীরে সমস্যা হয় না, তবে নাইটফল (স্বপ্নদোষ) হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এটা শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
৪. অতিরিক্ত হলে:
প্রতিদিন বা অতিরিক্ত বীর্যপাত করলে কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক ক্লান্তি, পেশি দুর্বলতা বা মনোসংযোগে সমস্যা হতে পারে, তবে এটা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়।
সহজভাবে বললে:
"নিজের শরীরের কথা শুনুন। যদি আপনার মধ্যে স্বাভাবিক চাহিদা অনুভব হয় এবং পরে ক্লান্তি বা শারীরিক অসুস্থতা না থাকে, তাহলে তা স্বাভাবিক। নির্দিষ্ট দিন বা সংখ্যার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।"