২৬ শে মার্চ এর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য। 26 শে মার্চ এর বক্তব্য

নিচে ২৬শে মার্চ (বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস) উপলক্ষে তিনটি ভিন্ন ধরণের সংক্ষিপ্ত ভাষণ (প্রায় ৫০০ শব্দে) দেওয়া হলো। ভাষণগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক অনুষ্ঠান এবং সরকারি/আনুষ্ঠানিক পরিবেশের জন্য উপযোগীভাবে সাজানো হয়েছে।

🎤 ভাষণ ১: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (বিদ্যালয়ে) উপস্থাপনের জন্য

শুভ সকাল।
সম্মানিত প্রধান শিক্ষক, শ্রদ্ধেয় শিক্ষকবৃন্দ, প্রিয় সহপাঠী ও বন্ধুগণ,

আজ ২৬শে মার্চ, আমাদের জাতীয় জীবনের গৌরবোজ্জ্বল দিন – মহান স্বাধীনতা দিবস। এই দিনে ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও দমননীতির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রুখে দাঁড়িয়েছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই দিনেই বাঙালির স্বাধীনতার ঘোষণা দেন, যার ফলেই নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পাই।
আমাদের স্বাধীনতার পথ ছিল রক্তাক্ত ও কণ্টকাকীর্ণ। ১৯৫২-র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৬৬-র ছয় দফা, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭০-এর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম এক ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে গড়ায়। ২৫শে মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনী “অপারেশন সার্চলাইট” চালিয়ে ঢাকায় সাধারণ মানুষের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায়। এর পরদিন ২৬শে মার্চ আমরা স্বাধীনতার শপথ নিই।
আজকের দিনটি আমাদের জন্য গর্ব, শ্রদ্ধা আর প্রতিজ্ঞার দিন। এই দিনে আমাদের মহান মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে হবে। আমাদের দায়িত্ব, আমরা যেন তাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে পারি – একটি সুশিক্ষিত, ন্যায়ভিত্তিক, দারিদ্র্যমুক্ত দেশ।


আসুন, আমরা সবাই প্রতিজ্ঞা করি,
স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করবো,
এই প্রিয় মাতৃভূমিকে ভালোবাসবো প্রাণ দিয়ে।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

🎤 ভাষণ ২: সামাজিক/সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থাপনের জন্য

আসসালামু আলাইকুম ও শুভ সকাল।
সম্মানিত অতিথিবৃন্দ, প্রিয় ভাই-বোনেরা,
আজ ২৬শে মার্চ – বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। এটি শুধুমাত্র একটি দিন নয়, এটি আমাদের অস্তিত্ব, আত্মপরিচয় এবং আত্মত্যাগের প্রতীক। এই দিনেই ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতার ডাক পাই।
বাঙালি জাতির দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল এই স্বাধীনতা। যারা জীবন দিয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন, নিখোঁজ হয়েছেন – তাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়েই আজকের এই বাংলাদেশ।
আজকের এই দিনে আমাদের উচিৎ একসাথে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করা – যেন আর কোন অন্যায়, দুর্নীতি, বৈষম্য মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। তরুণ প্রজন্মকে অবশ্যই জানতে হবে স্বাধীনতার ইতিহাস এবং সেই অনুযায়ী নিজেদের তৈরি করতে হবে।
আসুন আমরা সকলে শপথ করি –
স্বাধীনতাকে ভালোবাসবো,
এবং দেশপ্রেমে উজ্জীবিত থেকে দেশ গঠনে অবদান রাখবো।
জয় বাংলা...

🎤 ভাষণ ৩: সরকারি/আনুষ্ঠানিক পরিবেশের জন্য

শ্রদ্ধেয় সভাপতিমণ্ডলী, বিশেষ অতিথিবৃন্দ, সহকর্মী ও প্রিয় উপস্থিত সকল,
আজ ২৬শে মার্চ – বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক ও গৌরবময় দিন। আজ আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সেইসব বীর সন্তানদের, যারা নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে আমাদের এই স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।
১৯৭১ সালের এই দিনেই শুরু হয় আমাদের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। এর পেছনে ছিল দীর্ঘ আন্দোলনের ইতিহাস – ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা, গণঅভ্যুত্থান, নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়, এবং শেষ পর্যন্ত নির্যাতন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ।
আজকের বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ও অর্থনীতির পথে। কিন্তু এই অগ্রগতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের স্বাধীনতার মূল চেতনা – গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচার – এগুলো বজায় রাখতে হবে।
এই দিনে আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এবং সকল মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের।
তাদের রক্তের ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়, কিন্তু আমরা তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই তাদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানাতে পারি।
জয় হোক বাংলাদেশের, জয় হোক স্বাধীনতার।
জয় বাংলা।

Post a Comment