চিঠিপত্র লেখার নিয়ম।ব্যক্তিগত পত্র লেখার নিয়ম

চিঠিপত্র লেখার কিছু সাধারণ নিয়ম রয়েছে যা একটি সুশৃঙ্খল এবং সুন্দর চিঠি লেখায় সহায়ক হতে পারে। নিচে চিঠিপত্র লেখার কিছু মূল নিয়ম উল্লেখ করা হলো:

১. চিঠির প্রকার নির্বাচন

  • চিঠি লিখতে হলে প্রথমে চিন্তা করুন যে এটি কিসের জন্য লেখা হচ্ছে:
  • ব্যক্তিগত চিঠি: বন্ধু, পরিবার বা পরিচিতদের জন্য
  • ব্যবসায়িক চিঠি: অফিস, কোম্পানি বা সরকারি দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য
  • আবেদনপত্র: আবেদন বা অনুরোধের জন্য

২. শিরোনাম বা সালাম

চিঠির শুরুতে একটি শিরোনাম বা সালাম দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এটি চিঠির উদ্দেশ্য অনুযায়ী হতে পারে:

  • ব্যক্তিগত চিঠি: "প্রিয় [নাম],"
  • ব্যবসায়িক চিঠি: "শ্রদ্ধেয় [পদবী/নাম],"
  • আবেদনপত্র: "জনাব/জনাবা,"

৩. ভাষার সাদৃশ্য

  • চিঠির ভাষা বোধগম্য ও উপযুক্ত হওয়া উচিত। যেমন:
  • ব্যক্তিগত চিঠি: সাধারণ ও সহজ ভাষায় লেখা উচিত।
  • ব্যবসায়িক চিঠি: প্রফেশনাল ভাষায়, সাবধানতা এবং সৌজন্য বজায় রাখতে হবে।

৪. চিঠির মূল বিষয়

চিঠির মূল অংশে আপনার উদ্দেশ্য বা বার্তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। তথ্য বা অনুরোধ যথাযথভাবে এবং পরিষ্কারভাবে তুলে ধরুন।

৫. সংক্ষিপ্ততা

চিঠি খুব বড় হওয়া উচিত নয়। বিষয়টি যতটুকু প্রাসঙ্গিক, ততটুকুই লিখুন। অপ্রয়োজনীয় তথ্য বা বর্ণনা এড়িয়ে চলুন।

৬. চিঠির উপসংহার

  • চিঠির শেষে যদি কোনো অনুরোধ বা কাজের জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়, তা উল্লেখ করুন। যেমন:
  • ব্যক্তিগত চিঠি: "অপেক্ষায় রইলাম," অথবা "খুব শীঘ্রই দেখা হবে।"
  • ব্যবসায়িক চিঠি: "আপনার সাড়া প্রত্যাশা করছি।"
  • আবেদনপত্র: "আপনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।"

৭. স্বাক্ষর

  • চিঠির শেষে আপনার নাম এবং স্বাক্ষর দিন:
  • ব্যক্তিগত চিঠি: আপনার নাম স্বাক্ষর করুন।
  • ব্যবসায়িক চিঠি: প্রফেশনাল স্বাক্ষর এবং পদবী।

৮.  (Envelope)

চিঠি পাঠানোর সময়, নিশ্চিত করুন যে এটি সঠিক ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে। ঠিকানা পরিষ্কারভাবে এবং সঠিকভাবে লেখা উচিত।

এটি চিঠি লেখার মূল নিয়ম। আপনি চিঠির ধরন অনুযায়ী এগুলোকে সামঞ্জস্য করতে পারেন।

ব্যক্তিগত পত্র লেখার নিয়ম

ব্যক্তিগত পত্র লেখার সময় কিছু বিশেষ নিয়ম অনুসরণ করা উচিত যাতে চিঠিটি প্রাঞ্জল, হৃদয়গ্রাহী এবং সম্পর্কের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় থাকে। এখানে ব্যক্তিগত পত্র লেখার কিছু নিয়ম তুলে ধরা হলো:

১. সালাম বা শিরোনাম

চিঠির শুরুতে একটি উপযুক্ত সালাম ব্যবহার করুন, যা লেখকের সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে:

  • প্রিয় [নাম],
  • মহানুভাব [নাম],
  • প্রিয়তম [নাম],

এটা চিঠির tone তৈরি করে, এবং আপনার সম্পর্কের ভাব প্রকাশ করে।

২. চিঠির মূল বিষয় বা উদ্দেশ্য

চিঠির প্রথম প্যারাগ্রাফে আপনার উদ্দেশ্য পরিষ্কারভাবে তুলে ধরুন। ব্যক্তিগত চিঠিতে, এটি হতে পারে আপনার মনের অবস্থা, বিশেষ কোনো ঘটনা, অথবা কোনো সুখ-দুঃখের কথা:

  • “আমি জানি আপনি এই সময়ে অনেক ব্যস্ত থাকবেন, তবে আমি মনে করলাম কিছু কথা আপনাকে জানানো উচিত।”
  • “অনেকদিন হলো আপনার সাথে দেখা হয়নি, তাই ভাবলাম আজ কিছু সময় নিয়ে আপনাকে একটা চিঠি লিখি।”

৩. বিষয়বস্তু সহজ ও প্রাঞ্জল রাখা

ব্যক্তিগত পত্রে সহজ এবং প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা উচিত। লেখার সময় আপনার মনের ভাব প্রকাশ করুন। খুব কঠিন বা অপ্রয়োজনীয় ভাষা ব্যবহার না করে, এমন ভাষা ব্যবহার করুন যা ব্যক্তিগত সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে:

  • “আজকাল আমার খুব মন খারাপ থাকে, কারণ…”
  • “অনেকদিন পর তোমার সাথে কথা বললাম, তাই আমার খুব ভালো লাগছে।”

৪. অভিবাদন ও মিষ্টি কথাবার্তা

ব্যক্তিগত চিঠি লেখার সময় আপনির অনুভূতি বা অভিবাদন রাখতে হবে। প্রিয়জন বা বন্ধুদের প্রতি আপনার ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, কিংবা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারেন:

  • “আমি সত্যিই তোমার সাহায্যের জন্য কৃতজ্ঞ।”
  • “তোমার ভালোবাসা আমাকে শক্তি দেয়।”

৫. স্মৃতিচারণ বা গল্প শেয়ার করা

এটি একটি খুব সাধারণ দিক, বিশেষ করে বন্ধুদের বা পরিবারের সদস্যদের কাছে। আপনার জীবনের কোনো সুখকর স্মৃতি, হাস্যকর ঘটনা বা মজার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন, যা সম্পর্ককে আরো গভীর করবে:

“একদিন আমরা একসাথে যেদিন সৈকতে গিয়েছিলাম, সেটা আজও মনে পড়ে…”

৬. চিঠির উপসংহার

চিঠির শেষে কিছু আবেগপূর্ণ এবং প্রফেশনাল বা আদর্শ ভাষায় উপসংহার দিন:

  • “তোমার উত্তর পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।”
  • “আশা করি তুমি ভালো আছো এবং শীঘ্রই দেখা হবে।”

আপনার চিঠির শেষে আপনার নাম বা স্বাক্ষর দিন:

  • আপনার প্রিয়,
  • তোমার বন্ধু,
  • [আপনার নাম]

৭. স্মরণীয় নোট বা মিষ্টি কথায় চিঠি শেষ করা

আপনার চিঠি যদি খুব আনুষ্ঠানিক না হয়, তবে এটি মিষ্টি কিছু দিয়ে শেষ করতে পারেন যা সম্পর্কের বন্ধন আরো মজবুত করবে:

  • "তোমাকে অনেক ভালোবাসি।"
  • "শীঘ্রই দেখা হবে আশা করি!"

৮. কথোপকথন বা ফরমাল ব্যতিক্রম

ব্যক্তিগত পত্রে প্রয়োজন পড়লে স্বাভাবিক কথোপকথনের মতোই লেখা যেতে পারে, যেখানে আপনি ব্যক্তিগত অনুভূতি, সুখ-দুঃখ শেয়ার করতে পারেন।

৯. চিঠি সংক্ষিপ্ত রাখা

যতটা সম্ভব চিঠির মধ্যে বিষয়টি সংক্ষিপ্ত এবং পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত তথ্য বা আলোচনা এড়িয়ে চলুন।

ব্যক্তিগত চিঠি সাধারণত মনের অনুভূতি এবং সম্পর্কের গভীরতা প্রকাশের মাধ্যম হয়ে থাকে, তাই এটি যথাসম্ভব আন্তরিক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত।প্রিয় পাঠক  এই ছিল চিঠি লেখার সঠিক নিয়ম।

Post a Comment